বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবিতে এখনো নিখোঁজ ১, অপেক্ষায় পরিবার


হাতিয়া উপজেলার বঙ্গোপসাগরে দক্ষিণে বয়ার চরে ট্রলারডুবির ঘটনায় তিন দিনেও সন্ধান মেলেনি দৌলতখানের নিখোঁজ জেলে মো. নিজামের (৩০)। এ অবস্থায় তাঁর পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তির কোনো সন্ধান না পেয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে অন্য সদস্যরা।
নিখোঁজ জেলে নিজাম উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের এছাক মোড় এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে।
সরেজমিন নিখোঁজের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দুর্ঘটনায় ট্রলারে থাকা আট জেলের মধ্যে সাতজন জীবিত উদ্ধার হলে পরিবারের আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা আরও বেড়ে গেছে। প্রিয়জন জীবিত ফিরে আসবেন এমন অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁর বাবা-মা ও স্ত্রী।
নিখোঁজ নিজামের বাবা আব্দুল মালেক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার চার ছেলের মধ্যে এক ছেলে তিন বছর আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এক ছেলে দৌলতখান ছাকিনা আদর্শ একাডেমি থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। আরেক ছেলে বেকার। নিখোঁজ মেজো ছেলে নিজাম সাগরে মাছ ধরে। ওই টাকায় আমাদের সংসার চলে। কিন্তু নিজাম এখনো নিখোঁজ। আমি চাই, আমার ছেলে যেন ফিরে আসে। তা না হলে আমাদের কে দেখবে? আমাদের কে রোজগার করে খাওয়াবে?’
নিখোঁজ জেলে নিজামের স্ত্রী কুলসুম বেগম বলেন, ‘মাছ ধরা শেষ করে বাড়িতে ফেরার কথা ছিল নিজামের। কিন্তু আজ তিন দিন পার হলেও ফিরে এল না। তার চিন্তায় আমাদের পুরো পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। আমার ছেলে সারা দিন বাবা-বাবা করে কান্না করে। আমার আড়াই বছরের শিশুকে কে দেখবে? আমি আমার স্বামীকে জীবিত অথবা মৃত ফেরত পেতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ তারেক হাওলাদার বলেন, ‘নিখোঁজ জেলেকে উদ্ধারের জন্য কোস্টগার্ডকে বলা হয়েছে। কোস্টগার্ডের সদস্যরা এখনো ঢালচর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছেন। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিখোঁজ জেলেপরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে মাছ ধরা শেষে ফেরার পথে ৮ জেলে নিয়ে বঙ্গোপসাগরে ট্রলারটি ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। এতে ট্রলারে থাকা আট জেলের মধ্যে সাতজন উদ্ধার হলেও নিখোঁজ রয়েছেন নিজাম নামের একজন।
এইচকেআর
