ঢাকা বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

Motobad news

মনপুরায় সেই মাদ্রাসার শিক্ষককে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিল পুলিশ

মনপুরায় সেই মাদ্রাসার শিক্ষককে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিল পুলিশ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ভোলার মনপুরায় স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনকারী সেই মাদ্রাসার শিক্ষককে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। স্থানীয়রা ওই শিক্ষককে রাজনৈতিক চাপে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ করলেও নির্যাতন সহ্য করা ওই শিক্ষকের স্ত্রী ও তাঁর মা এই ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

এদিকে নারী নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় না এনে ছেড়ে দেওয়ায় সমাজে নারী নির্যাতন বেড়ে যাবে বলে আশংকা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

অপরদিকে মনপুরা পুলিশের ওসি সাইদ আহমেদ জানিয়েছেন, দুই পরিবার মিমাংসা হওয়ায় ও নির্যাতন হওয়ায় ওই গৃহবধূ ও তাঁর মা কোন অভিযোগ করে নাই। তাই পুলিশ ওই মাদ্রাসার শিক্ষককের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। তবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী মামলা করতে চাইলে পুলিশ মামলা নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার বিকেল ৪ টায় মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয় স্ত্রীকে নির্যাতনকারী চরফৈজুদ্দিন ফকিরহাট দাখিল মাদ্রাসার সেই শিক্ষক মো. শামীমকে। 

মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় এই তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন মনপুরা থানার ওসি সাইদ আহমেদ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, সোমবার সকালে সেই শিক্ষককের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে থানায় যান ওই শিক্ষকের শাশুড়ি। পরে থানার ভিতরে স্থানীয় প্রভাবশালী একাধিক রাজনৈতিক ব্যাক্তি ও ওই অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিবারের সদস্যরা ঘিরে ধরে মিমাংসার জন্য চাপ দেন। পরে একপর্যায়ে ওই মা মিমাংসায় রাজি হন। পরে পুলিশ মুচলেকা রেখে বিকেল ৪ টায় ছেড়ে দেয়।

তবে এই ব্যাপারে ওই শিক্ষকের স্ত্রী ও তাঁর মায়ের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হলেও তাঁরা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এই ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. শামীম স্যারের মুঠোফোনে চেষ্ঠা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। তাই তাঁর বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

এই ব্যাপারে নারী অধিকার ও নারী ও শিশু নির্যাতন নিয়ে কাজ করা কোস্টট্রাস্টের সাবেক কর্মকর্তা মাকছুদ ও নারী শিক্ষক নিয়ে কাজ করা নজরুল ইসলাম জানান, নারী নির্যাতনকারী যত বড়ই হউক না তাদের আইনের আওতায় না এনে ছেড়ে দিলে সমাজে নারী নির্যাতনকারীরা উৎসাহিত হবে এবং সমাজে নারী নির্যাতন বেড়ে যাবে। তাই তারা নারী নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবী করেন।

এই ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদ আহমেদ জানান, নিজেরা মিমাংসা হওয়ায় ও কেউ অভিযোগ না করায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। তবে মামলা করতে চাইলে মামলা নিয়ে পুলিশ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার রাত ১ টায় চরফৈজুদ্দিন ফকিরহাট দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ শামীম তার স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে শাররীক নির্যাতন চালায়। খবর পেয়ে ওই শিক্ষকের স্ত্রীর মা ৯৯৯ ফোন করে মেয়েকে উদ্ধারে পুলিশের সহায়তা চায়। পরে রাত ২ টায় মনপুরা পুলিশের একটি টিম ওই শিক্ষকের বাড়ি থেকে রক্তাত্ত অবস্থায় শিক্ষকের স্ত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে ও অভিযুক্ত শামীম মাষ্টারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন