ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

Motobad news
নদীতে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা

দুশ্চিন্তা ও অলস সময় পার করছেন লালমোহনের জেলেরা

দুশ্চিন্তা ও অলস সময় পার করছেন লালমোহনের জেলেরা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

নদীতে মাছ শিকারে চলছে নিষেধাজ্ঞা। এতে করে কর্মহীন হয়ে পড়েছে ভোলার লালমোহনের মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর জেলেরা। যার জন্য উপজেলার  ১৯টি পয়েন্টের অন্তত ৪০ হাজার জেলে এখন সংসার চালানো নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ইলিশের অভয়াশ্রমগুলোতে দুই মাসের জন্য সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে গত ১লা মার্চ (বুধবার) থেকে ৩০ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) রাত ১২ টা পর্যন্ত।

লালমোহন উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করা ১৯ টি পয়েন্টে নিবন্ধিত জেলে সংখ্যা ২৩ হাজার ১৭৮ জন। তবে এর প্রকৃত সংখ্যা অন্তত ৪০ হাজার। এর মধ্যে ধলীগৌরনগর এবং লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নে জেলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। নিবন্ধিত জেলেদের জন্য প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে ৪ মাস  চাল বরাদ্দ রয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন মৎস্যঘাট ঘুরে দেখা যায়, কেবল মাছ শিকারের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় বর্তমানে নিষেধাজ্ঞা চলায় বেকার সময় পার করছেন জেলেরা। এতে করে সংসার চালাতে চরম হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। মহাজনদের দাদন ও এনজিওর ঋণের চাপে দিশাহারা এসব জেলেরা।

লালমোহনের ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের বাত্তিরখাল মৎস্যঘাটের জেলে মো. মনজু বলেন, সংসারে স্ত্রীসহ দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ছেলেরাও আমার সঙ্গে নদীতে মাছ শিকার করে। আমাদের যা আয় হয় তা দিয়েই চলে সংসার। তবে গত কয়েকদিন আগ থেকে নদীতে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। যার ফলে আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি। এতে করে সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে। তাই এই নিষেধাজ্ঞার সময়ে আমাদের জন্য সরকারিভাবে যে চাল বরাদ্দ রয়েছে তা এখনো পাইনি। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন ওই চাল বিতরণ করা হয়।

ওই এলাকার মিন্টু মাঝি ও জয়নালউদ্দিন মাঝি নামের আরো দুই জেলে জানান, মৎস্য অফিসের লোকজন বলেছিল নিষেধাজ্ঞার সময় এনজিওর কিস্তি আদায় বন্ধ থাকবে। তবে এনজিওর লোকজন ইতোমধ্যে কিস্তি নিতে এসে হাজির। যেখানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিন বেলা খাওয়াটাই দায় হয়ে গেছে, সেখানে এনজিওর ঋণের কিস্তি দিবো কিভাবে। আমাদের দাবী নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে যেন এনজিওগুলোর কিস্তি বন্ধ রাখা হয়।

এব্যাপারে লালমোহন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, কয়েকটি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে জেলেদের বরাদ্দের এক মাসের চাল বিতরণ করা হয়েছে। অন্যান্য ইউনিয়নগুলোতেও খুব শিগগিরই চাল বিতরণ করতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে বলা হয়েছে। এছাড়া, এনজিওদের সঙ্গে নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের থেকে কিস্তি না নিতে বলা হয়েছে। তারপরও কোনো এনজিও যদি কিস্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করে, সেটি আমাকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।  

জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে; ভোলার ইলিশা থেকে মনপুরার চর পিয়াল পর্যন্ত মেঘনা নদীর ৯০ কিলোমিটার ও ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালী জেলার চর রুস্তম পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর অন্তত ১০০ কিলোমিটার এলাকা।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন