ঢাকা শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

Motobad news
শিরোনাম

মে দিবস পালন করলেও শ্রমিকের অধিকার নিয়ে কেউ কথা বলে না

মে দিবস পালন করলেও শ্রমিকের অধিকার নিয়ে কেউ কথা বলে না
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

আজ ১ মে আন্তর্জাতিক মে দিবস। বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে আন্দোলন-সংগ্রামের অনুপ্রেরণার একটি দিন। তবে আত্মদানের মধ্যদিয়ে অর্জিত এ দিবসের ১৩৭ বছরেও শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা পায়নি।

আজও ঘরে-বাইরে নির্যাতন-নিপীড়নসহ ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। এর মধ্যেই জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার লড়াই চলছে শ্রমজীবীদের। তবে সেই টিকে থাকার লড়াইয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। বৈশ্বিক সংকটের অজুহাতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি শ্রমিকের মজুরি।

এ নিয়ে দৈনিক মতবাদের সাথে কথা বলেছেন খাদ্য বিভাগের দৈনিক মজুরী ভিত্তিক শ্রমিক ৫৩ বছর বয়সী শাহ আলম এবং ২৮ বছর বয়সী শ্রমিক হাসানসহ আরও অনেকে। তারা জানিয়েছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার গল্প। তাদের সাথে কথা বলেছেন মতবাদের নিজস্ব প্রতিবেদক খান রুবেল।

বরগুনার আমতলী উপজেলার টুকুয়া গ্রামের বাসিন্দা শাহ আলম বলেন, ‘একসময় গ্রামে কৃষিকাজ করতাম। তাতে সংসার চলতো না। তাই বাড়তি উপার্জনের আশায় প্রায় ১৬-১৭ বছর আগে বরিশালে আসি। ভাটারখাল বস্তিতে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দৈনিক মজুরী ভিত্তিক শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করি।

তিনি বলেন, ‘শ্রমিক সরদার আলমগীরের মাধ্যমে খাদ্য বিভাগে দৈনিক মজুরিতে শ্রমিকের কাজ নেই। সেই থেকে এখন পর্যন্ত এখানেই কাজ করছি। যা উপার্জন, তা দিয়েই নিজের ও সংসারের খরচ যোগান দিতে হচ্ছে।

শাহ আলম বলেন, ‘সংসারে স্ত্রী এবং এক ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। তারা সবাই বরগুনা থাকে। ছেলেটি অনার্সে পড়াশোনা করছে। গোডাউনে কাজ করে যা পাই, তার সবটুকুই সংসারের পেছনে ব্যায় হয়।

তিনি বলেন, ‘ভাটারখাল এলএসডিতে দৈনিক হাজিরায় শ্রম বিক্রি করি। প্রতিদিন মজুরি হিসেবে লেবার সরদারের মাধ্যমে গত ৬-৭ বছর ধরে সর্বোচ্চ ৮শত থেকে ৯শ টাকা পর্যন্ত পাই। এর মধ্যে আর মজুরি বাড়েনি। আমার ন্যায্য মজুরি কত, তা গত ১৫ বছরেও জানতে পারিনি। শাহ আলম বলেন, কারণ জানতে গেলে কাজ হারাতে হবে। আর কাজ না থাকলে উপার্জন বন্ধ হয়ে যাবে, তাই যতটুকু পাই তাতেই সন্তুষ্ট।

অপর শ্রমিক ভাটারখাল বস্তির স্থানীয় বাসিন্দা হাসান বলেন, ‘কিশোর বয়স থেকে খাদ্য বিভাগের গোডাউনে দৈনিক মজুরীতে কাজ করছি। দৈনিক ৮শ টাকা মজুরি পাচ্ছি। এর মধ্যে দৈনিক তিনশ টাকা নিজের খরচ আছে। প্রতিদিন গড়ে তিনশতো টাকার বাজার লাগছে। তাতেও হয় না। ছেলের লেখাপড়ার খরচ। তার ওপর সপ্তাহ শেষে দুই হাজার টাকা সমিতির কিস্তির বোঝা। যে টাকা পাই তা দিয়ে সংসার চলে না।  

নগরীর মাহেন্দ্রা শ্রমিক আনোয়ার হোসেন। অনেকটা আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, ‘মে দিবস শ্রমিকদের আন্দোলনের একটি সুফল। প্রতি বছর দিবসটি ঢাকঢোল পিটিয়ে পালন করা হয়। শ্রমিক সংগঠনের নামে শ্রমিকদের কাছ মাসে এবং দৈনিক লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে সংগঠনগুলো। কিন্তু এই টাকা শ্রমিকের কোন কল্যাণে আসে না। নেতাদের ভোগ-বিলাসেই ব্যায় হচ্ছে শ্রমিকের ঘাম ঝড়ানো টাকা।  

 
 


গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

সর্বশেষ