ঢাকা শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

Motobad news
শিরোনাম

৪ দিন খোলা আকাশের নিচে সেন্টমার্টিনের দুর্গতরা, সুপেয় পানির সংকট

৪ দিন খোলা আকাশের নিচে সেন্টমার্টিনের দুর্গতরা, সুপেয় পানির সংকট
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ঘূর্ণিঝড় মোখায় দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ক্ষতিগ্রস্তরা তিনদিনেও মাথাগোজার ঠাঁই করতে পারেননি। সৌরপ্যানেল নষ্ট ও লাইনের তার ছিঁড়ে যাওয়ায় চালু করা যায়নি বিদ্যুৎ সংযোগ। লবণাক্ত পানি প্লাবনে দ্বীপের উত্তর ও পশ্চিমাংশের বীচ এলাকায় সুপেয় পানির সংকট শুরু হয়েছে।

এখনো পর্যাপ্ত ত্রাণ এসে পৌঁছায়নি দ্বীপে। বিধ্বস্ত বাড়িঘরের বাসিন্দারা খোলা আকাশের নিচে ত্রিপল টাঙিয়ে মানবেতর সময় কাটাচ্ছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা ছাড়া আর কোনো সেবা মিলছে না ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এ অবস্থার দ্রুত অবসান এবং খাদ্য সংস্থানের দাবি করেছেন দুর্গত মানুষগুলো।একইভাবে উপজেলার আরেক উপকূলীয় ইউনিয়ন সাবরাংয়ের শাহপরীর দ্বীপের তিনটি ওয়ার্ডেও ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষের মধ্যে একই অবস্থা বিরাজ করছে। বাতাসের তীব্রতায় তার ছিঁড়ে গিয়ে ২০টির অধিক বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে যাওয়ায় তিনদিনেও বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয়নি এখানেও। উপড়ে যাওয়া গাছগুলো সরানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন দুর্গতরা। স্থল যোগাযোগ সহজতর হওয়ায় এনজিও সংস্থাগুলো এগিয়ে এসেছে। ফলে এখানে খাদ্য সংকট নিয়ে কারও অভিযোগ নেই।

ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতায় দমকা বাতাসে টেকনাফের হোয়াইক্যং মিনাবাজার এলাকায় সদ্য তৈরি মুজিববর্ষের বেশ কয়েকটি ঘরও বিধ্বস্ত হয়েছে। বিধ্বস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো আবার দাঁড় করাতে প্রশাসনের সহযোগিতা চাইছেন দুর্গতরা।

জেলা প্রশাসন বলছে, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ দ্রুত শেষ করে সহযোগিতা দেওয়া হবে।

১৪ মে ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার অতিক্রম করে মিয়ানমারের সিটওয়ে এলাকায় আঘাত হানে। বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রমকালে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ এবং একমাত্র প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিনে তাণ্ডব চালায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় দেড় হাজার পরিবার। কিন্তু তিনদিন পার হলেও পর্যাপ্ত সহযোগিতা দ্বীপে পৌঁছায়নি বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

তবে কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

টেকনাফের আরেক উপকূলীয় ইউনিয়ন সাবরাংয়ের শাহপরীর দ্বীপে স্থল যোগাযোগ সহজতর হওয়ায় বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা এখানকার ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে এখনো সরকারি কোনো ত্রাণ পৌঁছায়নি বলে দাবি করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। সেন্টমার্টিন দ্বীপের মতো এখানেও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে।

সাবরাং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার আবদুল মান্নান বলেন, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় দেড় হাজারা ঘরবাড়ি একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। আরও দেড় হাজারের মতো বাড়িঘর আংশিক ক্ষতি হয়েছে। আমরা এখনো সরকারি কোনো ত্রাণ পাইনি। তবে বেসরকারি সংস্থা ১৮০টি পরিবারকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা করে সহযোগিতা দিয়েছে। সরকারিভাবে টিন বা সহযোগিতা না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো মেরামত করা যাচ্ছে না। শুকনো খাবারের চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য টিন ও অন্য সহযোগিতা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে যাওয়ায় এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন।

জেলা প্রশাসনের গড়া কন্ট্রোলরুমে দায়িত্বশীল কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ জাগো নিউজকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। এখনো পূর্ণাঙ্গ তালিকা এসে পৌঁছায়নি। এরপরও সেন্টমার্টিনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৪০০ বান টিন, ঘর প্রতি তিন হাজার নগদ টাকা বিতরণ করতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বুধবার তা দ্বীপে পৌঁছে যাবে বলে আশা করা যায়। দুর্গতদের জন্য পর্যাপ্ত খাবারের সংস্থান করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে সহযোগিতা দেওয়া হবে।


আরজেএন
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

সর্বশেষ