যে গ্রামে হচ্ছে অ্যাডেনিয়ামের বাণিজ্যিক চাষ


অ্যাডেনিয়ামের আদি নিবাস আফ্রিকার মরু অঞ্চল। ইংরেজি নামও তাই ‘ডেজার্ট রোজ’। বাংলায় মরু গোলাপ। গাছটা আমাদের দেশেও অনেকের ছাদবাগানে শোভা পায়। চারা তৈরি করে কেউ কেউ বিক্রিও করেন। কুড়িগ্রামে এবার ফুল গাছটার বাণিজ্যিক চাষ শুরু করেছেন দুই ভাই।
২০২০ সালে থাইল্যান্ড থেকে অ্যাডেনিয়ামের বিভিন্ন জাতের বীজ সংগ্রহ করেন মিজান। তারপর তাঁর ছাদবাগানে লাগান। গাছ বড় হয়ে বাহারি ফুল ধরে। ছাদবাগানে দুই বছর ধরে গাছগুলোর পরিচর্যা করে বিস্তর অভিজ্ঞতা অর্জন করেন মিজান। ফুল ফুটলে অ্যাডেনিয়ামের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে ব্যাপক সাড়াও পান। অনেকে কিনতে চান। তারপর আগ্রহীদের কাছে বিক্রি শুরু করেন তিনি।
এরই মধ্যে মিজানুর রহমানের কৃষিবিদ বড় ভাই শাহীনুর ইসলাম একদিন তাঁর বাসায় এসে অ্যাডেনিয়াম দেখে মুগ্ধ। দুই ভাই কথা বলে তখনই সিদ্ধান্ত নেন ফুলগাছটির বাণিজ্যিক চাষ করবেন। দুজনে পরামর্শ করে চলে যান গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম। নিজেদের জমিতে নার্সারি গড়ে তোলার কথা জানান পরিবারের সদস্যদের। দুই ভাইয়ের কথা শুনে রীতিমতো হাসাহাসি করেন তাঁরা। সেই হাসাহাসিতে শামিল হয় গ্রামের মানুষও। তাঁরা বাবার কাছে জমি চাইলে তিনিও নিরুৎসাহিত করে বলেন, ‘এই গ্রামে দামি গাছ আর ফুল কে কিনবে। তোমরা না থাকলে দেখাশোনা করবে কে?’ অনেক চেষ্টার পর তাঁরা তাঁদের বাবাকে রাজি করান। নিজেদের জমিতেই গড়ে তোলেন নার্সারি।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সেই নার্সারিতেই বাণিজ্যিকভাবে অ্যাডেনিয়াম চাষ শুরু করেন তাঁরা। মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের নার্সারিতে ৪০ প্রজাতির অ্যাডেনিয়াম আছে।
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এখন উদ্যোক্তা তৈরির কথাও ভাবছেন মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা প্রচুর সাড়া পেয়েছি। দেশের সব জেলায় আমাদের গাছ যাচ্ছে। ভবিষ্যতে প্রচুর সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। তাই প্রশিক্ষণ দিয়ে এলাকার তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই।’
আরজেএন
