৭ লাখ গ্যাসের চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস


অবৈধ গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে রাজধানী ও আশপাশের জেলায় গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থা তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে গত জুন পর্যন্ত ৭ লাখের বেশি গ্যাসের চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তারা। এর মধ্যে অবৈধ ব্যবহারের কারণে ৫ লাখ ২০ হাজার ৪০২টি। আর বকেয়ার কারণে ৮২ হাজার ৪৮২টি।
অবৈধ গ্যাসলাইন বা সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও বকেয়া আদায় বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। সোমবার রাজধানীর তিতাস কার্যালয়ে এটি আয়োজন করা হয়। এতে তিতাসের পরিচালিত অভিযান নিয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশীদ মোল্লাহ্।
তবে অবৈধ সংযোগে কী পরিমাণ গ্যাস সাশ্রয় হয়েছে, তার কোনো হিসাব নেই তিতাসের কাছে। তিতাসের সিস্টেম লস (কারিগরি ক্ষতি) নিয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। আরেক দিন সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, অবৈধ সংযোগ উচ্ছেদ অভিযান চলমান আছে। একটি সংযোগ অবৈধ থাকা পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অবৈধ সংযোগের সঙ্গে তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে; এমন প্রশ্নের জবাবে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব সংযোগে তিতাসের লোক জড়িত নন।
তিতাসের সব কাজ করে ঠিকাদারেরা। তবে কিছু কিছু অভিযোগ আছে। অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিন হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে তিতাসে। গত দুই বছরে ২২৮ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৮ জনকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আর ১৬ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ২৮টি বিভাগীয় মামলা চলমান।
তিতাস বলছে, গত ১ বছর ৮ মাসে তিতাস মোট ২৮ হাজার ৩৯৮টি অভিযান পরিচালনা করেছে। এ সময় তারা ৬৬৮ কিলোমিটার অবৈধ পাইপলাইন উচ্ছেদ করেছে। আবাসিকের পাশাপাশি শিল্প খাতেও অভিযান চালানো হয়েছে।
২৫০টি অবৈধ সংযোগসহ ৪০০টি শিল্পকারখানা, ৪৬৬টি বাণিজ্যিক সংযোগ, ৫৫টি শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুৎ (ক্যাপটিভ) ও ১০টি সিএনজি স্টেশনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তিতাসের এসব অভিযানে ৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা খরচ করে প্রায় ৩১৩ কোটি টাকা অতিরিক্ত ও ৯১ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। বকেয়ার একটি হিসাবও তুলে ধরেছে তিতাস। এতে বলা হয়, গত মে পর্যন্ত তিতাসের মোট বকেয়া ৬ হাজার ৭০২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি খাতে ১ হাজার ৬৫৭ কোটি ও বেসরকারি খাতে ৫ হাজার ৪৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।
তিতাসের বকেয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হারুনুর রশীদ মোল্লাহ্ বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিল পেলে বকেয়া অনেক কমে যায়। তিতাসের ৪০ শতাংশ গ্যাস ব্যবহার করে বিদ্যুৎকেন্দ্র। সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে বকেয়া আছে ১ হাজার ৫৮ কোটি টাকা। আর বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে বকেয়া আছে ১ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। কিন্তু বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলে তো দেশ অন্ধকার হয়ে যাবে।
আরজেএন
