কোনো অজুহাতে গ্যাস বিক্রিতে বেশি দাম নেওয়া যাবে না-বিইআরসি চেয়ারম্যান


কোনো যুক্তিতেই গ্যাস বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান নূরুল আমিন। সরকার নির্ধারিত মূল্যেই ব্যবসাীদের এলপি গ্যাস বিক্রি করতে হবে বলে জানান তিনি।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশি দামে এলপি গ্যাস বিক্রি হওয়ার খবর পেয়ে বরিশালের শনিবার দুপুরে এক মতবিনিময় সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি। বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সম্মেলন কক্ষে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি’র চেয়ারম্যান নূরুল আমিন।
সভায় অংশ নেন এলপি গ্যাসের বিভিন্ন কোম্পানির স্থানীয় ডিলাররা। এসময় তাঁরা তাদের নানা সমস্যার কথা বিইআরসির চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরেন । ডিলাররা বলেন, সরকার ১২ কেজি এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করেছে ৯৯৯ টাকা। কিন্তু কোম্পানি থেকে এই সিলিন্ডার পাঠানো হচ্ছে এক হ্জাার ১৯ টাকা দরে। তাও বরিশালে কোম্পানির নিজস্ব গুদামে রাখা হয়।
ব্যবসায়ী সাইফুল আজিম বলেন, গোডাইন থেকে আনতে আমাদের আনা, দোকানে পৌঁছানো, শ্রমিক মজুরি, গুদাম ভাড়া এবং বছরে চারটি লাইসেন্স নবায়ন ফিসহ অন্যান্য মিলিয়ে আমাদের প্রতি সিলিন্ডার গ্যাস এক হাজার ৭০ টাকায় কিনতে হয়। আমরা কোম্পানি থেকে কমিশন পাই মাত্র ৪০ টাকা। ফলে এখন আমাদের সরকার নির্ধারিত দামে গ্যাস বিক্রি করলে ৩০ টাকা লোকসান গুণতে হবে। এতে আমাদের ব্যবসার মূলধনই উঠবে না।
ব্যবসায়ীদের এমন বক্তব্যের জবাবে বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের উপকারের জন্য গ্যাসের দাম ৯৯৯ টাকায় নির্ধারণ করেছে। কিন্তু এরপরও আপনাদের নানা রকম বক্তব্য আছে এবং থাকবে। তবে যত অসুবিধাই থাক না আপনাদের সবাইকে সরকার নির্ধারিত দামেই গ্যাস বিক্রি করতে হবে।
নূরুল আমিন বলেন, দেশের মানুষ যাতে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে গ্যাস কিনতে পারেন, সে জন্য আমরা সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে সারাদেশে গিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করছি। আমরা মানুষকে গ্যাসের প্রকৃত দামটা জানাতে চাই। কেউ ডাতে তাদের ঠকাতে না পারে, বেশি দাম রাখতে না পারে সে জন্যেই আমাদের এই মতবিনিময় সভা।
তিনি বরেন, আমি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে জেনেছি কোথাও এক হাজার আবার কোথাও এক হাজার ১০ টাকায় গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি হয়। আবার অনেক জায়গায় গ্যাস বিক্রির রশিদ দেওয়া হয় না। এটা অন্যায়। পাইকারি, খুচরা সব বিক্রেতাকেই বিক্রির রশিদ দিতে হবে ক্রেতাকে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেন নুরুল আমিন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক বরিশাল মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশালের নবাগত বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী, বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান, র্যাবের-৮ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান, বরিশাল মেট্টাপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু আহাম্মদ আল মামুন।
এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরী, বরিশাল মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী আবুল কালাম আজাদ, বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের বিভিন্ন সফল কর্মকা- নিয়ে ভিডিও ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করা হয়।
