দৃষ্টিনন্দন অক্সফোর্ড মিশন, গ্রিক স্থাপত্যশৈলীর অনবদ্য প্রতীক
বরিশালের বগুড়া রোডে বিশাল আকৃতির পাম গাছগুলোর মাঝ দিয়ে উঁকি মারলে দেখা মিলবে নান্দনিক এক স্থাপনা-এপিফানী গির্জা। উচ্চতার দিক থেকে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই গীর্জাটিকে স্থানীয়রা চেনেন ‘অক্সফোর্ড মিশন চার্চ’ নামে।
চোখ জুড়ানো এই স্থপনাটির ঝকঝকে ভাব দেখ বোঝারই উপায় নেই যে এর বয়স এখন ১২৮। ইতিহাস বলছে, এই গির্জার নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছিল ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে। নয়নাভিরাম ও আধ্যাত্মিক চিন্তা মাথায় রেখেই ফাদার স্ট্রং এদেশীয় প্রাচীন মহামন্দিরের অদলে গির্জাটির মূল নকশার পরিকল্পনা করেন। সাথে ছিলেন মাদার এডিথ। ইংল্যান্ডের স্থপতি ফিলিপ থিকনেস গির্জাটির নির্মাণ কাজের তত্ত¡াবধায়ন করেন।
গ্রিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত গির্জাটি প্রায় ৫ তলা ভবনের সমান উঁচু। প্রার্থণা কক্ষের ৪০টি স্তম্ভ স্থাপনাটিকে করেছে শক্তিশালী। উপরে ছাদের ভেতরের অংশ পুরোটাই কাঠ দিয়ে মোড়ানো। চারপাশে বারান্দাসহ দক্ষিণমুখে রয়েছে মূল দরজা। এছাড়া ৩ দিকেও দরজা আছে বেশকয়েকটি। ফলে গির্জার ভেতরটা সবসময়ই থাকে আলো-বাতাসে পূর্ণ।
মূল প্রার্থণা কক্ষের ফ্লোরটি তৈরী করা হয়েছে কলকাতা থেকে আনা সুদৃশ্য মার্বেল পাথরের টাইলস দিয়ে। মূল বেদীর ওপরে প্যালেস্টাইনের বেথলেহেম থেকে আনা ক্রুশটিও গীর্জাটির অন্যতম আকর্ষণ। এশিয়ার ব্যতিক্রমী এই গির্জাটির পাশেই রয়েছে একটি বেল টাওয়ার। যার চূড়ার আংশে আছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় গির্জাঘন্টা।
গির্জা কর্তৃপক্ষ জানায়, কবি তরু দত্তের মা ক্ষেত্রমণি দত্তের দেয়া অর্থ-সম্পদের উইল থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে গির্জার প্রাথমিক কাজ শুরু হয়। এরপর ফাদার স্ট্রংয়ের বোন অক্টোভিয়া ব্রুকের দেয়া অর্থে বাকি কাজ শেষ হয়। যদিও গির্জার পাশের সুদৃশ্য বেল টাওয়ার নির্মাণের সমস্ত ব্যয়ই বহন করেছিলেন ফাদার স্ট্রং নিজেই।
দৃষ্টিনন্দন এই গির্জার সার্বিক পরিবেশ মন ভালো করে দেবে সব বয়সী মানুষের। তবে চাইলেই প্রবেশ করা যাবে না এখানে। আগে নিয়ে নিতে হবে কর্তৃপক্ষের অনুমতি।
এইচকেআর