৬৫ দিন পর আজ সাগরে মাছ শিকারে যাবেন জেলেরা

ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই ৬৫ দিনের জন্য সাগরে সকল প্রকার মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো। শনিবার মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ায় সাগরে নামার প্রস্তুতি নিয়েছে ভোলার সমুদ্রগামী জেলেরা। এর আগে ৬৫ দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকায় অলস সময় পার করেছিলো জেলেরা।
জেলার ৭ উপজেলার বিভিন্ন মাছ ঘাট ও মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছরের মতো এবারও তাঁরা নিষেধাজ্ঞা মেনে মাছ ধরা থেকে বিরত থেকেছে। কিন্তু বরাবরের মতো এবারও ভারতীয় এবং দেশীয় প্রভাবশালী জেলেরা রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীকে ম্যানেজ করে অবাধে মাছ শিকার করেছে। সমুদ্রগামী জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রণোদনার চালও ঠিকমত বিতরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ তাদের। এছাড়া আগামী অক্টোবরে মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে, তা ভারতের সঙ্গে মিল রেখে দেয়ার দাবি করেছেন জেলেরা।
চরফ্যাশনে সামরাজ মৎস্য ঘাটের জেলে রহমান মাঝি বলেন, ৬৫ দিনের অভিযান আছিলো আমরা জাল, নৌকা সব উঠাইয়া রাখছি। সাগরে মাছ ধরতে যাইনি। এখন অভিযান শেষ আমরা সাগরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। যদি মাছ পাই, তাহলে এই কয়দিনের ধার-দেনা শোধ করতে পারমু।
দৌলতখানের চৌকি ঘাটের হোসেন মাঝি বলেন, ৬৫ দিনের অভিধানে আমরা খেয়ে না খেয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাইছি। প্রণোদনা তো দূরের কথা কেউ আমাদের কোনো খোঁজ খবরই নেয়নি। আমরা ধার-দেনা কইরা চলছি। এখন অভিযান শেষ নৌকা এবং জাল তৈরি করছি সাগরে যাওয়ার জন্য।
ভোলার ইলিশা ঘাটের আলম ফরাজী বলেন, সরকারের দেয়া সকল নিষেধাজ্ঞা আমরা মেনে চলি কিন্তু ভারতের জেলেরা আইসা অভিযানের সময় বাংলাদেশের সাগর থেকে মাছ ধরে নিয়ে যায় এতে তো অভিযান ব্যর্থ হয়। তাই আমাদের দাবি আগামীতে ভারত এবং বাংলাদেশে যাতে একই সঙ্গে অভিযান হয়।
ভোলার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানিয়েছেন, জেলেদের সচেতনতার জন্য ব্যাপক প্রচারণা এবং কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এবার জেলেরা সাগরে মাছ শিকার করতে পারেনি। এতে আগামী দিনে সাগরে মাছের উৎপাদন বাড়বে এবং জেলেরাই এর সুফল পাবে বলে আশা করছেন এই কর্মকর্তা। ভোলায় ১ লাখ ৫৯ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এর মধ্যে ৬৪ হাজার জেলে সাগরে মাছ শিকার করে থাকে। তবে নিবন্ধনের বাইরেও বহু জেলে সাগরে মাছ শিকার করে।
আরজেএন