রাজাপুর বিএনপির কার্যালয়টি এখন ‘নৌকার কার্যালয়’
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা বিএনপির কার্যালয়টি এখন ‘নৌকার নির্বাচনী কার্যালয়’ হিসেবে ব্যবহার শুরু করেছেন ঝালকাঠি-১ আসনে (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আওয়ামী লীগের মনোনীত আলোচিত প্রার্থী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর। কার্যালয়টি তাঁর ব্যক্তিগত জমিতে করা হয়েছিল।
তাই বিএনপি থেকে বহিস্কৃত এই নেতা এখন নৌকার নির্বাচনী প্রধান কার্যালয় লেখা একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছেন সেখানে। মঙ্গলবার দুপুরে রাজাপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাহিম হোসেন ও বর্তমান রাজাপুর শহর ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি মো. রমজান মৃধা এই সাইনবোর্ডটি টানিয়ে দেন।
জানা যায়, রাজাপুর-কাঁঠালিয়ায় দীর্ঘদিন যাবৎ বিএনপির শক্ত ঘাটি। শত চেষ্টা করেও বিএনপির এ ঘাটিতে আঘাত হানতে পারেনি আওয়ামী লীগ। এ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর (বীরউত্তম)। ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয়, ১৯৯১ সালে পঞ্চম, ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ এবং ২০০১ সালে অস্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের কোন প্রতিদ্বন্দ্বি ছিল না।
২০০৭ সালে জরুরী অবস্থাকালীন প্রতিকূল পরিস্থিতির কারনে তাকে দেশ ছাড়তে হয়। সে কারনে ২০০৮ সালের নবব জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নিতে পারেননি। আর ২০১৪ সালে বিএনপি দশম সংসদ নির্বাচন বয়কট করায় তিনি প্রার্থী হননি।
তাঁর মালিকানাধীন রাজাপুর বাইপাস মোড় এলাকায় দুইতলা বিশিষ্ট একটি ভবনে ২০০৩ সাল থেকে উপজেলা বিএনপির স্থায়ী প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যাবহার করে আসছেন। গত ৩০ নভেম্বর শাহজাহান ওমর আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকার মনোনয়ন নেয়।
পরে তাঁর মালিকানাধীন ভবন থেকে বিএনপির সকল সাইনবোর্ড ব্যানার সরিয়ে ফেলার জন্য তাঁর অনুসারিদের বললে তাঁরা অন্যত্র সরিয়ে নেয়। মঙ্গলবার সেখানে নৌকার নর্বাচনী সাইনবোর্ড উঠানো হয়।
এদিকে ২০ বছরের বিএনপির প্রধান কার্যালয়ে নৌকার নির্বাচনী কার্যালয় করায় উপজেলার সকল বিএনপি নেতা কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এক সময়ে যেই নেতার কারনে গর্বে বুক ভরে যেত আজ সেই নেতাকেই বেইমান, মীরজাফরসহ বিভিন্ন উপাদি দিচ্ছে বিএনপির কর্মীরা।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিএনপির কার্যক্রম পরিচালনা করা ভবনটি শাহজাহান ওমরের ব্যক্তিগত জায়গার ওপরে তাঁর নিজের অর্থে নির্মাণ করা। এতদিন তিনি বিএনপিতে ছিলেন, তাই বিএনপির কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
এখন সে আওয়ামী লীগে গেছেন তাই আওয়ামী লীগের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। এখনে আমাদের কিছু বলার নাই।
এবিষয়ে রাজাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এএইচএম খায়রুল আলম সরফরাজ বলেন, তিনি যখন ঝালকাঠিতে আসছেন তখন আমাকে বলছেন তাঁর ওই অফিস রাজাপুর আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ে হিসেবে ব্যাবহার করবেন।
তখন তাকে বলছি রাজাপুরে আওয়ামী লীগের অফিস আছে। আপনি নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে ব্যাবহার করতে পারেন। নতুন কার্যালয়ে যাব কি যাবো না সেটা পরে দেখা যাবে।
এ ব্যাপারে ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর বলেন, আমার জমিতে আমি একটি ভবন করেছি। আমি যে দলে আছি সেই দলেরই অফিস থাকবে এটা। ওখান থেকে আমি নৌকার নির্বাচনী কাজ করবো।
এইচকেআর