বরিশালে ফরচুন সুজের কারখানায় শ্রমিকদের ভাঙচুর, আনসারদের গুলি

জুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফরচুন সুজ লিমিটেডে হামলা করেছে শ্রমিকরা। বকেয়া বেতন চাইতে গেলে এই ঘটনার সূত্রপাত। এ সময় কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা শ্রমিকদের ওপর ১০ রাউন্ড গুলি করেছে বলে জানা গেছে। এতে অন্তত পাঁচ শ্রমিক আহত হয়েছেন।
এদিকে শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে কাউনিয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান এবং পাঁচ আনসার সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে বরিশাল বিসিকে অবস্থিত কারখানায় এই ঘটনা ঘটে। কারখানাটি বিপিএলে ফরচুন বরিশাল টিমের মালিক ও বিসিক শিল্পনগরী ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমানের।
গুলিবিদ্ধ শ্রমিকদের মধ্যে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন উজিরপুর উপজেলার নারায়ণপুরের হানিফ সরদারের ছেলে মেহেদী (২৫), বাবুগঞ্জের রহমতপুরের গোলাম মোস্তফার ছেলে রাজি (২৫), পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার ছারছিনা এলাকার শামসুদ্দোহার ছেলে তামিম (২০), গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের আব্দুল খালেক প্রমাণিকের ছেলে মিজানুর (২০) ও ঝালকাঠির নলছিটির বাসিন্দা খোকনের ছেলে রাফসান (২০)। এদের সকলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আন্দোলনকারী শ্রমিক নিপা হালদার বলেন, কম্পানি কথা দিয়েছিল প্রতি মাসের ৮ তারিখের মধ্যে বেতন দেবে। কিন্তু তা না দিয়ে এক মাসের বেতন পরের মাসের ২৫ তারিখেরও পরে দেয়। আমরা ফরচুন সুজের কাছে দুই মাসের বেতন পাব। আজকে ( বৃহস্পতিবার) বেতন চাইতে গেলে কোম্পানি দুই মাসের বেতন না দিয়ে ১৫ দিনের বেতন দিতে রাজি হয়। এতে কিছু শ্রমিক কারখানা থেকে বের হয়ে গেলে তাদের আনসার ক্যাম্পে ধরে এনে মারধর করে। এই শ্রমিক দাবি করেন, মারধরের একপর্যায়ে গুলি করে আনসার সদস্যরা।
আরেক আন্দোলনকারী ইউনুস বলেন, এখন পর্যন্ত ৪/৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শ্রমিকদের যখন মারধর করে তখন ফরচুন সুজের মালিক মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে ছিলেন।
আরেক আন্দোলনকারী শ্রমিক নাসরিন বলেন, বেতন চেয়েছি। বেতন দেবে না ভালো কথা, আমার শ্রমিক ভাইদের মারবে কেন? এই খবর শুনে আমরা সবাই জড়ো হয়ে মিছিল করছিলাম। অতিউৎসাহী কেউ কেউ কারখানায় ইট মেরে জানালার গ্লাস ভেঙেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনসার সদস্য ইউসুফ আলী বলেন, শ্রমিকরা কারখানার কাছে বেতন পাবে। তারা আন্দোলনে নেমে প্রথমেই এসে আমাদের আনসার সদস্যদের ক্যাম্পে হামলা চালায়। আমরা উপরের নির্দেশে ১০ রাউন্ড গুলি করি। এতে কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। কেউ নিহত হয়েছেন কি না জানা নেই।
বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে।
চারজন শ্রমিক আহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এইচকেআর