ঢাকা মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

Motobad news
শিরোনাম
  • বিচারক রকিবুল ইসলামকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানালেন পিপি কাজী বসির উদ্দিন যুক্তরাষ্ট্র ও মালয়েশিয়ায় বেনজীরের সম্পদ ক্রোক, ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ বিএনপি এখন চাঁদাবাজদের দলে পরিণত হয়েছে: নাহিদ ইসলাম বরিশালে জাল টাকা ও বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ আটক ৪ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া: ভোলার ১০ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ বরগুনা জেলা নির্বাচন অফিসে আগুন, পুড়েছে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সাঈদ-মুগ্ধদের ‘জাতীয় শহীদ’, ড. ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ঘোষণা কেন নয় বরিশালের ৬টি আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ঘোষণা মিটফোর্ডে হত্যার শিকার সোহাগের পরিবারের পাশে বিএনপি পিরোজপুরে পথসভা থেকে ফেরার সময় এনসিপি নেতার ওপর হামলা
  • কোরবানির পশুর বাজার কর্পোরেট বাণিজ্যের দখলে

    কোরবানির পশুর বাজার কর্পোরেট বাণিজ্যের দখলে
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    কোরবানির পশু কিনতে হাটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় চিরাচরিত চিত্র। কিন্তু পাল্টাচ্ছে দৃশ্যপট। হাটের পাশাপাশি খামারমুখী হচ্ছেন ক্রেতারা। লাইভ ওয়েট, বংশ মর্যাদার ট্রেন্ড, বাহারি জাত ও নানান রকম অফারের হাঁকডাকে খামার থেকে পশু কেনার আগ্রহ বাড়ছে। এছাড়া হাটের ভেতর ঠেলাঠেলি, দালালের দৌরাত্ম্য, হাসিলের খরচসহ নানামুখী জটিলতার মুখে হাটবিমুখ হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। অ্যাগ্রো মালিকরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে মানুষ আরও বেশি খামারমুখী হবেন।

    ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শহরে যারা কোরবানি দেন, তাদের বেশিরভাগের বাড়িতেই পশু রাখার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এছাড়া কোরবানির গরুকে খাওয়ানো থেকে শুরু করে দেখভালের জন্য আলাদা লোকবলের দরকার হয়। যা নগরবাসীর জন্য অতিরিক্ত ঝক্কি। খামারে গরু কিনলে এ ধরনের ঝামেলা নেই। বাড়িতে গরু পৌঁছে দেয়াসহ মাংস প্রস্তুত করে দেয়ার দায়িত্বও নিচ্ছেন খামার ব্যবসায়ীরা।

     
    এছাড়া হাটের ভিড়, অতিরিক্ত হাসিল আদায়, পশু পরিবহনের খরচ এড়াতে হাটের চেয়ে খামার থেকেই গরু কিনতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন সাধারণ ক্রেতারা। তারা বলছেন, হাটে প্রচুর ভিড় থাকে, ফলে নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাছাড়া হাটে দালালের খপ্পরেও পড়তে হয় প্রায়ই। তারা কমিশন চায়, হয়রানি করে। এ কারণে কোরবানির পশু ক্রয়ে খামারে ভরসা পাচ্ছেন ক্রেতারা।
     
    কেরানীগঞ্জের আব্দুল মালেক অ্যাগ্রো ফার্মের কর্ণধার সম্রাট মৃধা বলেন, একটা সময় ছিল, যখন মানুষ হাটে গিয়ে কোরবানির পশু কিনতে পছন্দ করতেন। এখন দিন বদলে গেছে; মানুষের ব্যস্ততাও বেড়েছে। কাজেই সবাই ডিজিটাল যুগের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের চেষ্টা করছেন। ঝামেলা কম হওয়ায় মানুষ এখন এদিকে বেশি ঝুঁকছেন।
     
     
    মোহাম্মদপুরের আল মদিনা ক্যাটল ফার্মের ম্যানেজার মো. রাজীব বলেন, হাট বসার আগেই ক্রেতারা বিভিন্ন খামার ঘুরে তার পছন্দের গরুটি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ ওজনে কিনছেন, কেউ দরদাম করে কিনছেন। আবার অনেক ক্রেতা আগেভাগেই ‘প্রি বুকিং’ দিয়ে রেখেছেন কোরবানির পশু। যাতে ঈদের আগের দিন এসে তারা পশুটি নিয়ে যেতে পারেন। এর জন্য আমরা বাড়তি কোনো খরচ নিচ্ছি না।
     
    এ খামারে গরু কিনতে আসা ধানমন্ডির ফয়সাল হাসান বলেন, বাজারে যে গরুগুলো বিক্রির জন্য আনা হয় সেগুলোর মান নিয়ে অনেক সময় শঙ্কা থাকে। খামারের গরুগুলোকে প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে থাকে। তাছাড়া ঝামেলাহীনভাবে খামারে এসে নিজ চোখে দেখতে গরু বাছাই করা যাচ্ছে। এরাই আমার বাসায় গরু ডেলিভারিও দিয়ে দেবে। যে কারণে খামারের প্রতি আস্থা ও আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
     
    তবে খামারে বিক্রি হওয়া পশু নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও। আরেক ক্রেতা শফিকুল মোল্লা বলেন, ফার্ম সিন্ডিকেটের কারণে অনেক ক্রেতা গরু পছন্দ হওয়া সত্ত্বেও অতিরিক্ত দাম চাওয়ার কারণে কিনতে পারছেন না। তার অভিযোগ, কোরবানির ঈদকে লক্ষ্য করে সিন্ডিকেট চক্র কম দামে গরু নিয়ে মজুত করে রাখে। ঈদ আসলে ক্রেতাদের কাছে অতিরিক্ত দাম চেয়ে বসে। ফলে ক্রেতারা লাগামহীন দামে গরু কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
     
    সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও রয়েছে সমালোচনা। গরু-ছাগলের দাম বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে কোনো কোনো খামারি গরু-ছাগলের বংশ মর্যাদার অজুহাত দিচ্ছেন। এ উচ্চ বংশের পশু কিনতে উচ্চ শ্রেণির মানুষই বেশি আগ্রহ দেখিয়ে থাকেন। নিজেদের প্রতিপত্তি দেখাতেই তারা এত দাম দিয়ে গরু কিনছেন। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে খামারিরাও চড়া দাম হাঁকাচ্ছেন। যার প্রভাব সাধারণ ক্রেতাদের ঘাড়েই পড়ছে বলে অভিযোগ নেটিজেনদের।

     
    বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি মালিক ইমরান হোসেন বলেন, মানুষ খামারমুখী হওয়ার অনেক কারণ আছে। এগ্রো ফার্ম থেকে গরু কিনলে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত বিনা খরচে গরু রাখার সুযোগ পাচ্ছেন ক্রেতারা। তাছাড়া খামার থেকে গরু কিনলে ক্রেতারা ওজন মেপে নিশ্চিত হয়েই নিতে পারছেন। যারা কোরবানিতে গরু কেনেন, মূলত তারা একবারই ক্রেতা। বেপারীদের বলা দাম ও মাংসের পরিমাণ সম্পর্কে তারা সংশয়ে থাকেন। কিন্তু খামার থেকে সঠিক মাংসের পরিমাণ নিশ্চিত করা হয়। যে কারণে ঠকে যাওয়ার শঙ্কা কম থাকে।
     
    ঈদের আগে ফ্যামিলি নিয়ে গরু কেনার যে উৎসব তা উদযাপন করতেও ক্রেতারা খামারে আসছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, খামারে মা-বাবা, ভাই-বোন, সন্তানদের এনে দেখেশুনে পছন্দ করে পশু কেনার সুযোগ পায় মানুষ। যা হাটের ভেতর গাদাগাদির মধ্যে সম্ভব নয়।


    এইচকেআর
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ