কাঁধে রাজ্যের বোঝা, তবুও দায়িত্বে অবিচল ইউএনও নিয়তি রাণী কৈরী


৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পরে কয়েক দিনের মাথায়ই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানদের তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
অব্যাহতি দেওয়া হয় পৌরসভার মেয়র এবং কাউন্সিলরদেরও। বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ।
যার ফলে উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এসে পড়ে ইউএনও'র কাঁধে। গেল বছরের ২১ আগস্ট দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৩৫ তম ব্যাচের নিয়তি রাণী কৈরী।
সরকার পতনের পর মানুষ বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সবার আগে ছুটছেন ইউএনও"র কাছে। এর ফলে দৌলতখানের আপামর জনসাধারণের ভরসাস্থল হয়ে উঠছেন উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ এই কর্মকর্তা । আইনের মধ্যে থেকেই এলাকার জনগনের সেবায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা কমিটি থেকে শুরু করে শিক্ষা, কৃষি উন্নয়ন, হাটবাজার ব্যবস্থাপনা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বয়স্ক-বিধবা ভাতা, মাতৃত্ব ভাতা, কর্মসংস্থান কর্মসূচি, চোরাচালান প্রতিরোধ, এনজিও সমন্বয়, টেন্ডার, টিআর-কাবিটা, বিভিন্ন দিবস উদযাপনসহ উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন দফতরগুলোর বিভিন্ন কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ইউএনও।
এছাড়াও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দায়িত্ব পালন, গণশুনানি, বিভিন্ন বিরোধ মীমাংসা, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধসহ প্রতিদিন নানাবিধ সামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন তিনি। কর্ম তৎপরতা দেখলে মনে হবে যেন তাঁর ক্লান্তি নেই।
দৌলতখান উপজেলা বিএনপির সহ-সংগঠনিক সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক জুলু বলেন, ইউএনও'র ওপর অনেক দায়িত্ব। তবুও তিনি আন্তরিক। মানুষ তাঁর কাছে গেলে তিনি অত্যন্ত সুন্দরভাবে নানা পরামর্শ দেন।
তাঁর আন্তরিকতায় উপজেলার রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরও সন্তুষ্ট। দৌলতখান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই বলেন, একজন ইউএনও উপজেলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তবে অনেক চাপ থাকা সত্ত্বেও তিনি সব কাজই আন্তরিকতার সঙ্গে করছেন।
দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়তি রাণী কৈরী বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর আগের চেয়ে দায়িত্ব অনেক বেড়েছে। এটা নতুন অভিজ্ঞতা। এটিকে আমি চাপ বা বোঝা মনে করছি না। জনগণকে সেবা দেওয়ার বাড়তি সুযোগ বলে মনে করছি। আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
এইচকেআর
