‘মব’ সৃষ্টি করে সময় টিভির দুই সাংবাদিককে মারধর বিএনপি নেতার


ভোলার দৌলতখান পৌর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী রাসেল ‘মব’ সৃষ্টি করে সময় টেলিভিশনের সহযোগী সিনিয়র রিপোর্টার নাসির উদ্দিন লিটন ও ভিডিও জার্নালিস্ট উৎপল দেবনাথকে মারধর করেছেন। সংবাদ সংগ্রহের সময় এ হামলার শিকার হন দুই সংবাদকর্মী। এ ঘটনায় দৌলতখান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক।
হামলার নেতৃত্বদানকারী কাজী রাসেল বর্তমানে নিজেকে ভবানীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয় দেন। তবে, ভবানীপুর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি এখনও অনুমোদন দেয়া হয়নি বলে দাবি করেন দৌলতখান উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সাজু।
থানা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (২২ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর এলাকায় হাবু চেয়ারম্যানের বরফ মিলের পাশে রাসেল কাজির বাড়িতে সরকার প্রদত্ত জেলেদের সহায়তার গরু বিতরণ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহে যান সাংবাদিক নাসির উদ্দিন লিটন ও উৎপল দেবনাথ।
এ সময় উপস্থিত স্থানীয় বিএনপি নেতা কাজী রাসেল, নিজাম কাজী, কাজী রাকিব ও রিয়াজসহ কয়েকজন তাদের বাড়িতে সাংবাদিক প্রবেশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ক্যামেরা নিয়ে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ধাক্কা দিয়ে সামনের পাকা রাস্তায় নিয়ে যান। সেখানে প্রায় ২০ মিনিট অবরুদ্ধ করে রাখেন। মোবাইল ফোনে লোকজন জড়ো করেন।
এসময় সাংবাদিক নাসির উদ্দিন লিটন ও ক্যামেরাম্যান উৎপলকে উদ্দেশ্য করে তারা অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। এমনকি ধাক্কা দিয়ে বাড়ির বাইরে এনে রাস্তার ওপর ফেলে দেন।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক নাসির লিটন আরও অভিযোগ করেন, রাসেল ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শনের পাশাপাশি তাদের মোবাইল ফোনে ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে রাসেল কাজী প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। ঘটনার সময় ক্যামেরাম্যান উৎপল দেবনাথের হাতে থাকা ক্যানন ক্যামেরা (মডেল নং AG-AC9OEN) কেড়ে নিয়ে ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। এতে প্রায় এক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
এ ঘটনায় সাংবাদিক নাসির উদ্দিন লিটন থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রকাশ্যে হামলা ও হুমকির শিকার হয়েছি। আমরা আমাদের নিরাপত্তা চাই এবং ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
তিনি আরও বলেন, মব সৃষ্টি করে আমাদের ঘিরে ফেলে তারা। সেখানে যদি আমরা কোনো কথা বলতাম, তাহলে আমাদের আজ মেরেই ফেলতো বিএনপি নেতা কাজী রাসেল ও তার লোকজন।
এ বিষয়ে দৌলতখান উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সাজু বলেন, আমি এখন ঢাকায় আছি। সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।
দৌলতখান উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফারুক মাস্টার বলেন, ঘটনাটা শুনেছি। আমরা তদন্ত করে নিশ্চিত হয়ে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, সময় টিভির সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা জানতে পেরেছি। লিখিত অভিযোগ (জিডি) গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এইচকেআর
