ঢাকা রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

অপরাধের স্বর্গরাজ্য রাতের দপদপিয়া সেতু 

অপরাধের স্বর্গরাজ্য রাতের দপদপিয়া সেতু 
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরিশাল শহরের দক্ষিণ প্রান্তে কীর্তনখোলা নদীর উপর শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত (দপদপিয়া) সেতু। বরিশাল থেকে বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলাসহ রয়েছে একাধিক রুট। প্রতিদিনই সেতুটি পারাপার করে হাজার হাজার যানবাহন। বিকেল হলেই সেতুর উপর ঘুরতে আসেন অনেক ভ্রমণ পিপাষু তরুণ-তরুণী। সন্ধ্যা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত এসব মানুষের আনাগোনা সেতুর উপরে চোখে পড়বে। কিন্তু সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই যেন পাল্টে যায় সেতুর চারপাশের চিত্র। 

সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে সেতুটির ১৩৪টি লাইটপোস্টের সকল বাতি দীর্ঘদিন ধরে বিকল থাকার কারণে রাতের বেলা যেন এক ভুতুরে পরিবেশ তৈরি হয় চারপাশে। পুরো সেতু জুড়ে কোনো বৈদ্যুতিক আলো সরবরাহ নেই। এতে সন্ধ্যার অন্ধকার নামার পর দপদপিয়া সেতু থেকে একদিকে যেমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে যানবাহন চলাচল অন্যদিকে অপরাধের স্বর্গরাজ্য যেন সক্রিয় হয়ে ওঠে। আলো না থাকার সুযোগে সেতুর ওপর  তরুণ তরুণীরা লিপ্ত হয় অনৈতিক কর্মকাণ্ডে।

 এছাড়াও আশেপাশের এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী চক্রের জমায়েত ঘটে সেতুর আশেপাশে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো নজরদারি না থাকায় রাতের আঁধারে সেতু এলাকায় ঘটে ছিনতাই, চুরির ঘটনা। সেতুতে বৈদ্যুতিক আলোহীন ঘুটঘুটে অন্ধকার বিরাজ করায় সাধারণ পথচারীরা গাড়ির নিচে চাপা পড়ে যেকোনো সময় বড়ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। 

ছিনতাইয়ের কবলে পড়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মানজুরুল হাসান জানান, সন্ধ্যার পরে টিউশন শেষে পায়ে হেঁটে সেতু পার হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন তিনি। সেতুর মাঝখানে যেতেই পেছন থেকে ২ টি বাইকে ৫ জন বখাটে এসে পথরোধ করে দাঁড়ায়। একজনে চাকু বের করে সাথে যা আছে সব দিয়ে দিতে বলে। এসময় অন্ধকার সেতুতে আশেপাশে কেউ না থাকায় বাধ্য হয়ে সাথে থাকা মোবাইল ফোন টাকা ছিনতাইকারীদের দিয়ে দেই। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সেতুতে কোন আলো না থাকায় সন্ধ্যার পরে এমন ছিনতাই প্রায়ই ঘটছে এখানে। 

স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন জানান, সেতু ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন করা হলে তাতেও কোন সুফল আসছে না। বিষয়টি সম্পর্কে সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ অবহিত থাকলেও কার্যকরী কোন উদ্যোগ নিচ্ছেনা। 

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুজন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। সেতুর বাতিগুলোর সংযোগ থাকেনা, খুঁটির ইলেকট্রিক সিস্টেম সব নষ্ট হয়ে গেছে। পুরো সিস্টেম ঠিক করতে হবে। আমরা আগামী অর্থ বছরে সম্পূর্ণ লাইট সিস্টেম ঠিক করবো। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী সোলার সিস্টেমে সব বাতিগুলো আলাদা থাকবে, একটির সাথে আর একটির কোন সংযোগ থাকবে না। 
 


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন