বানারীপাড়ায় শিশু শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, মৃত্যু নিয়ে রহস্য

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মান্নান হাওলাদারের ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণী পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থী সাজিদ (১২)’র ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে তার পরিবার। সোমবার (১২ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রথমে সাজিদের নানু জেসমিন বেগম ঘরের সামনের বারান্দার মাডামের সাথে তার নাতিকে ঝুলতে দেখে ডাক-চিৎকার দেন।
পরে বাড়ির অন্য লোকের সহায়তায় ঝুলন্ত অবস্থা থেকে সাজিদকে নামিয়ে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, সে অনেক আগেই মারা গেছে। পরে স্বজনরা বানারীপাড়া থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে সেখানে থাকা সাজিদের মা ছেলের লাশ ময়না তদন্ত না করার জন্য অনুরোধ জানান। পরে তাদের সাথে থাকা সাজিদের মামা রাকিব (২৮) ও অন্যান্য স্বজনরা ময়না তদন্ত করার পক্ষে বললে পুলিশ সাজিদের মরদেহ বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের মর্গে পাঠায়।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার ১২ জুলাই সকাল ৬টার সময় সাজিদের মা শারমিন বেগম পাশের বাড়িতে প্রাইভেট পড়াতে যান। পরে সাজিদ ঘরে থাকা নানু জেসমিন বেগমকে বলে পাশের মক্তব্যে কোরআন শিখতে যায়।
মক্তব থেকে বাড়িতে এসে নানুর সাথে সকালের নাস্তা খেয়ে পাশের বাড়িতে ঘুরতে যায় দুজনেই। ওই বাড়িতে অন্যদের সাথে নাতিকে খেলতে দেখে বাড়িতে চলে আসেন সাজিদের নানু। পরে সাজিদ বাড়িতে ফিরে নানুকে ডাক দিয়ে সামনের দরজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে। নানু ঘরের পিছনে বসে সাজিদকে ভাত খেতে ডাকতে থাকলে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরের সামনের বারান্দায় এসে নাতিকে মাডামের সাথে ঝুলতে দেখে ডাক চিৎকার দেন।
এ বিষয়ে বানারীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকা সাজিদের কয়েকজন নিকট আত্মীয় ও স্থানীয়রা জানান, কি কারণে সাজিদ আত্মহত্যা করবে এটা তাদের বোধগম্য নয়। এতটুকু বয়সে এমনকি ঘটনা তার সাথে হয়েছে যার কারণে মৃত্যুকে বেছে নিয়েছে এই শিশু। ওই ঘরে কি হয়েছিলো ওইদিন এমন প্রশ্নও করছেন অনেকে।
স্থানীয়রা আরও জানান, সাজিদের পিতা মান্নান হাওলাদার ঢাকায় প্রাইভেট কারের ড্রাইভারের চাকরি করেন। কয়েক বছর সাজিদের মা ঢাকায়ই ছিলেন। তবে বিয়ের পরে কোনদিনই তার শ্বশুরবাড়ি বরগুনায় যেতে পারেননি শারমিন।
এদিকে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে মান্নান তার শ্বশুরবাড়ি বানারীপাড়ায় এসেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সাজিদ তার মা শারমিন, নানু জেসমিন ও দুই মামা রাজিব ও রাকিব একই ঘরে বসবাস করতেন।
এ ব্যাপারে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন জানান, শিশুটির মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে ময়না তদন্তের জন্য লাশ বরিশাল মর্গে পাঠানা হয়েছে।
এমবি