ঢাকা সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news

ফকির ‍আলমগীরের মৃত্যুতে শোকাহত মতবাদ পরিবার

ফকির ‍আলমগীরের মৃত্যুতে শোকাহত মতবাদ পরিবার
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পী ফকির ‍আলমগীরের মৃত্যুতে শোকাহত দৈনিক মতবাদ পরিবার। ‍এক শোক বিবৃতিতে মরহুমের বিদায়ী ‍আত্মার মাগফেরাত ‍এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন পত্রিকাটির প্রকাশক মো. আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়া, সম্পাদক ‍এস.এম জাকির হোসেন, যুগ্ন সম্পাদক হেনরী স্বপন, বার্তা সম্পাদক সৈয়দ মেহেদি হাসান, খান রুবেল সহ অন্যান্য সাংবাদিক ‍এবং কর্মকর্তাবৃন্দ।

শোক বিবৃতিতে মতবাদ সম্পাদক ‍এসএম জাকির হোসেন বলেন, ফকির ‍আলমগীরের মতো ‍একজন গুনি ব্যক্তিকে হারানো মানে অনেক বড় কিছু হারানো। কেননা তিনি ছিলেন সংগীত জগতের ‍একটি প্রতিষ্ঠান।

ফকির আলমগীরের জন্ম ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে। কালামৃধা হাইস্কুল থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। জগন্নাথ কলেজ (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে তিনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৬৬ সালে ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেন ফকির আলমগীর। সেই সূত্রেই গণসংগীতে আসা। ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে তিনি ষাটের দশক থেকেই সরব হয়ে ওঠেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আগে যেসব বড় আন্দোলন হয়েছিল, সেগুলোতে অসামান্য ভূমিকা রেখেছিলেন ফকির। তার কণ্ঠ বজ্র হয়ে বেজেছিল আন্দোলনের মিছিলে।

এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে ফকির আলমগীর যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। কণ্ঠসৈনিক হিসেবে তিনি স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের মনে ছড়িয়ে দেন বিজয়ের স্পৃহা, সাহসের আলো।

দেশ স্বাধীনের পর পূর্ণাঙ্গভাবে সংগীতে মননিবেশ করেন ফকির আলমগীর। নিজেই গড়ে তোলেন ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী। কেবল গণসংগীত নয়, ফকির আলমগীর স্বাধীন দেশে পপ গানের সঙ্গে লোকজ সুরের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে নিয়মিত গান করতে থাকেন। তার গাওয়া বিখ্যাত গান ‘ও সখিনা গেছস কিনা ভুইল্যা আমারে’ বাংলার প্রতিটি মানুষের কানে বেজেছে। এছাড়া ‘নাম ছিল তার জন হেনরি’, ‘মায়ের একধার দুধের দাম’, ‘নেলসন ম্যান্ডেলা’র মতো গানগুলো উপহার দিয়েছেন।

দেশীয় সংগীতে ফকির আলমগীরের অবদান কতখানি, তা পরিমাপ করা অসম্ভব। তবে তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি দিয়েছিল সরকার। ১৯৯৯ সালেই তার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল সম্মানজনক একুশে পদক। অবশ্য পুরস্কারের চেয়েও ফকির আলমগীরের বড় প্রাপ্তি ছিল গণমানুষের ভালোবাসা। সংগীতের মাধ্যমে তিনি মানুষকে যতটা আনন্দ দিয়ে গেছেন, যতটা সাহস আর প্রতিবাদ শিখিয়ে গেছেন, তা টিকে থাকবে যুগের পর যুগ। আর গণসংগীতের নায়ক হয়ে ফকির আলমগীর থেকে যাবেন দেশের ইতিহাসের স্বর্ণালী পাতায়।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন