ঢাকা সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news

সরকারি নির্দেশনা থাকলেও বরিশালের লঞ্চ ছাড়েনি, নানা অজুহাত

সরকারি নির্দেশনা থাকলেও বরিশালের লঞ্চ ছাড়েনি, নানা অজুহাত
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

শ্রমিকদের পরিবহনের জন্য বিশেষ বিবেচনায় লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হলেও  বরিশালে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। অভ্যান্তরিন রুটে মাত্র একটি লঞ্চ ছেড়ে গেলেও ঢাকা রুটে কোন লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বলছে, সময় ও যাত্রী সল্পতার কারনে তারা লঞ্চ ছাড়েননি। ওদিকে ভোর থেকে নৌ-বন্দরে ঢাকাগামী যাত্রীরা এসে ফিরে গেছেন। ব্যক্ত করেছেন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া। যাত্রীদের দাবী, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে লঞ্চ মালিকরা লাভ-লোকসানের হিসেব কষছেন।

বিআইডব্লিটিএ'র উপ পরিচালক বরিশাল নৌ-বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা নয় বরং যাত্রী সংকটে ছাড়েনি।

সরেজমিনে সকাল ৮টায় বরিশাল নদী বন্দরে দেখা গেছে, দুই শতাধিক যাত্রী পন্টুনে অবস্থান করেছেন। এছাড়াও আরো কয়েকশ’ যাত্রী বিভিন্ন বাহনে করে নদী বন্দরে এলে লঞ্চ স্টাফরা যাত্রীদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন। ফলে লঞ্চে ঢাকা যাওয়ার জন্য যারা এসেছিলেন তারা সড়ক পথে ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করছেন।

নৌ বন্দরে অপেক্ষমান যাত্রী সাবু বলেন, এভাবে জনগণের সাথে প্রতারণা করা মোটেই উচিত না। এতগুলো যাত্রীকে কষ্ট দেওয়াটা ঠিক না। শ্রমিকরা কি মানুষ না? শ্রমিকদের জন্য কি সরকারের কোন কর্তব্য নেই? তারা এসি রুমে বসে যা মনে চায় সেই সিদ্ধান্ত নিবে তা হয় না। সরকার যেহেতু ঘোষণা দিয়েছে, লোকসান হলেও শ্রমিকদের লঞ্চে করে ঢাকায় পৌঁছাতে হবে। এটা তাদের দায়িত্ব।
আরেক যাত্রী জুয়েল বলেন, গতকাল বরিশালে এসেছিলাম। কিন্তু মানুষের ঢেউ দেখে ফিরে গেছি। আজকে আবার এসেছি। এসে দেখি লঞ্চ চলাচল বন্ধ। শ্রমিকরা বারবার প্রতারণার শিকার হচ্ছে। যারা লকডাউন দেয় আর তোলে তারা জনগনের কথা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেন না। তারা ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করেন।

রেনু বেগম বলেন, আমার একটা মেয়ে আছে গ্রামের বাড়িতে। লকডাউন তুলে দেওয়ায় মেয়েকে দেখতে এসেছিলাম। লঞ্চ ছাড়ার কথা শুনে এসে দেখি লঞ্চ ছাড়ছে না। আমার হাতেও টাকা নাই যে বাড়ি ফিরে যাবো। আমি কি করবো, কিভাবে বেশি ভাড়া দিয়ে বাসে ঢাকা যাবো আর কি খাবো সেটাই বুঝতেছি না। সরকারের উচিত আমাদের কথা চিন্তা করা। আমাদের ঢাকা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা উচিত।

সজীব নামে এক যাত্রী বলেন, কালকে খবরে দেখেছি লঞ্চ চলবে। সেই খবরে এসে দেখছি লঞ্চ চলাচল করছে না। এমন ঘোষণা দিয়ে আমাদের সাথে বাটপারি করা হচ্ছে। যখন তখন লকডাউন দেয় আবার তুলে দেয়। লঞ্চ চলার ঘোষণা থাকলেও এসে দেখি লঞ্চ চলে না।

এ বিষয়ে পরাবত-১০ লঞ্চের সুপারভাইজার মোকলেছুর রহমান বলেন, শনিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে ঘোষণা দেওয়া হলো লঞ্চ চলাচল করবে। তখনতো যাত্রী ছিল না। সময় বেধে দেওয়া হলো আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল করবে। এত অল্প সময়ে লঞ্চ ঢাকা দিয়ে পৌঁছতেও পারবে না। তাছাড়া পন্টুনে যাত্রী নেই। একটি লঞ্চ ঢাকায় যেতে ৩/৪ লাখ টাকার তেল খরচ হয়। যাত্রী যদি পঞ্চাশ জন হয় তাহলেওতো তাদের নিয়ে ছেড়ে যাবে না। তাছাড়া আমাদের স্টাফরা ছুটিতে। হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত আসায় তারাও আসতে পারেনি। এজন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

ওদিকে রুপাতলী ও নথুল্লাবাদে ঢাকামুখি যাত্রীদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভিড় দেখা গেছে। আজও অনেকে সড়ক পথে ঢাকায় যাচ্ছেন। তবে শনিবারের মত অস্বাভাবিক ভিড় সড়কে নেই। তবে বরিশাল নদী বন্দর থেকে ভোলা রুটে এমএল মিলন-১ এক্সপ্রেস নামে একটি ছোট্ট লঞ্চ সকাল ৮টায় ছেড়ে গেছে। এছাড়া বন্দর কর্মকর্তা জানিয়েছেন বরগুনা থেকে ছেড়ে আসা দুটি লঞ্চ নৌ বন্দরে নোঙর করে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাবে।


এমইউআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন