বাউফলে স্বাস্থ্যকর্মীকে লাঞ্ছিত করলেন সেই আলোচিত চেয়ারম্যান
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নে ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্পেইন পরিচালনা করতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা আলোচিত সেই ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের অসদাচরণের শিকার হয়েছেন। এছাড়াও আল-আমিন শিকদার নামের একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে চেয়ারম্যান নিজ হাতে লাঞ্ছিত করেছেন।
আল-আমিন সিকদার কনকদিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী। তিনি কনকদিয়া ইউনিয়নের ঝিলনা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারেক শিকদারের ছেলে।
এর আগেও চেয়ারম্যান শাহিন আনসার উদ্দিন নামের এক কৃষি কর্মকর্তাকে নিজ হাতে লাঞ্ছিত করেন। সম্প্রতি চেয়ারম্যান শাহিন বিচারপ্রার্থী এক কিশোরীকে বিয়ে করে সারা দেশে আলোচনার ঝড় তোলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শনিবার সকাল ৯টায় কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদে কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্পেইন শুরু হয়। সেই ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও একজন সুপারভাইজার। গ্রামাঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ স্বল্পশিক্ষিত হওয়ায় তারা অনলাইন আবেদন সম্পর্কে না বুঝে অনলাইন স্লিপ ছাড়াই শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে টিকা নিতে ভিড় করেন।
স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রত্যেককে অনলাইন আবেদন করতে সহযোগিতা করে টিকা দিতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আইডি কার্ড রেখে অনলাইন আবেদন ছাড়া টিকা না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। তিনি ইউনিয়ন পরিষদে এসে স্বাস্থ্যকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করেন। একপর্যায়ে আল-আমিন নামের ওই স্বাস্থ্যকর্মীকে চড়-থাপ্পড় মেরে লাঞ্ছিত করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, চেয়ারম্যান এসে বিষয়টা জানতে চাইলে আমরা তাকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলতে পারতাম। কিন্তু তিনি আমাদের কোনো কথা না শুনে আমাদের তুই-তোকারিসহ অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। আমাদের আরেকজন স্বাস্থ্যকর্মীকে থাপ্পড় মারেন। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
লাঞ্ছিত হওয়া স্বাস্থ্যকর্মী আল-আমিন শিকদার রোববার সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় কর্তব্যরত পুলিশ দর্শকের ভূমিকায় ছিল। তারা চেয়ারম্যানকে নিবৃত করেননি।
এর আগে বাউফল উপজেলার সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আনসার উদ্দিনকে প্রকাশ্যে মারধর করেন চেয়ারম্যান শাহিন। ওই ঘটনায় মামলা হওয়ার পর তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন।
কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কাউকে লাঞ্ছিত বা গালাগাল করিনি। আমার সঙ্গে সামান্য কথাকাটাকাটি হয়েছে। কারণ স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মবহির্ভূতভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যকর্মী আল-আমিন আমাকে অবহিত করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এমবি