‘খেলাফত রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল আনসারুল্লাহর ৪ সদস্য


সাইবার টহলের মাধ্যমে গত ছয় মাস ধরে কয়েকজন যুবককে নজরদারি করছিল পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। শুরুতে তাদের কার্যক্রম ধীর হলেও ক্রমেই তা বাড়তে থাকে। টানা ছয় মাস নজরদারি করার পর আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) চার সদস্যকে আটক করে এটিইউ।
বুধবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বারিধারায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এটিইউর পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস) মোহাম্মদ আসলাম খান।
তিনি বলেন, এই গ্রুপের সদস্যরা ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’ প্রতিষ্ঠার জন্য অনলাইনে উগ্রবাদী বিভিন্ন পোস্ট প্রচার করে আসছিল। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার দিত। নাশকতা করার জন্য এই চক্রের সদস্যরা পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতির জন্য একটি গ্রুপ খুলে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করত।
পুলিশ সুপার আসলাম খান বলেন, বড় কোনো নাশকতা করার মতো তাদের সক্ষমতা নেই। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই আমরা তাদের আটক করেছি। তাদের সঙ্গে আর কার যোগাযোগ ছিল তা জানতে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, আটক হওয়া এবিটি সদস্যরা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য। তারা সবাই একই এলাকায় বসবাস করতেন। সেই সুবাদে তারা নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ ও অনলাইনে যোগাযোগ করতেন। গত ৬ মাস ধরে তাদের ওপর নজরদারি চালিয়ে আটক করা হয়। এদের মধ্যে মো. রায়হান হােসেন ওরফে সাব্বির হােসেন রাইহান মাতাউল হাজি আব্দুর লতিফ ভূইয়ান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্র। তানভীর হােসেন স্থানীয় হাজী মিছির আলী ডিগ্রি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ২য় বর্ষে শিক্ষার্থী। মাে. আমিনুল ইসলাম ২০১৬ সালে রায়েরবাগ এলাকার বর্ণমালা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ইন্টারনেট ব্যবসা শুরু করে। অপর সদস্য সাগর ইসলাম ঢাকার গভ. ল্যাবরেটরি কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, আটক মাে. রায়হান হােসেন ওরফে সাব্বির হােসেন রাইহান ওরফে আল রাব্বি (১৮) ও তার সহযােগীরা ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’ প্রতিষ্ঠার জন্য অনলাইনে উগ্রবাদী প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। তাদের উদ্দেশ্যে ছিল বাংলাদেশে খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা। তারা জঙ্গি নেতা জসীমউদ্দিন রাহমানীর মতাদর্শকে অনুসরণ করতেন। এ কারণেই বিভিন্ন উগ্রবাদী বই ও বক্তৃতা অনলাইনে পােস্ট করতেন। এতে যারা আগ্রহী হতেন তাদের সঙ্গে নিয়মিত যােগাযােগ করতেন এ চক্রের সদস্যরা।
এসপি মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় জঙ্গি সংগঠনগুলো ভেঙে পড়েছে। বড় কোনো হামলা চালানোর মতো তাদের সক্ষমতা নেই। তবে তারা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নিজেদের মতাদর্শ প্রচার ও নতুন কর্মী সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এ বিষয়ে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট জঙ্গি সংগঠনগুলোর সদস্যদের উপর নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর কদমতলী থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এইচকেআর
