ঢাকা মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news

বরিশালে করোনা ইউনিটে আইসিইউর অপেক্ষায় ১৫ রোগী

বরিশালে করোনা ইউনিটে আইসিইউর অপেক্ষায় ১৫ রোগী
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরিশাল বিভাগে চলতি সপ্তাহে করোনা শনাক্ত ও আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার দুটোই কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১১ জন নতুন আক্রান্ত ১৭০ জন। যা বিগত জুলাই মাসের তুলনায় অর্ধেক। কিন্তু আক্রান্ত হয়ে যেসব রোগী শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা সংকটাপন্ন অবস্থা নিয়ে বাড়ি থেকে হাসপাতালে আসছেন। এসব রোগীদের মধ্যে গত ২ দিন ধরে আইসিইউর জন্য অপেক্ষমাণ আছেন ১৫ জন রোগী । কিন্তু  আইসিইউ ইউনিটে যে ২৬ টি শয্যা আছে তা রোগীতে পরিপূর্ণ। তাই এই ১৫ জন রোগীর আইসিইউ প্রয়োজন হলেও পাচ্ছেন না আইসিইউ সেবা। এছাড়া ১৫ দিন থেকে ১ মাস পর্যন্ত আইসিইউতে ভর্তি আছেন এমন রোগীও রয়েছে। ফলে সংকট যেন কাটছে না। আইসিইউ সাপোর্ট না পাওয়ায় মারা যাচ্ছেন এসব রোগী। ২০২০ সালের ২৭ মে থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত ৭৮৯ জন রোগী জায়গা পেয়েছেন আইসিইউতে। বিপরীতে এখন পর্যন্ত করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন মোট ৬ হাজার ৭৯৪ জন রোগী। এর মধ্যে মারা গেছেন ১ হাজান  ২৬৫ জন। এবং ছাড়পত্র নিয়ে স্বুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫ হাজার ৩৩০ জন। 

 ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় মোট জনসংখ্যা  ৮৩ লাখ ২৫ হাজার ৬৬৬ জন। যদিও ১০ বছরে এই সংখ্যাটা আরো বাড়ছে। জনসংখ্যার বিবেচনায় বরিশালে বিভাগের প্রতি ৩ লাখ ২০ হাজার মানুষের জন্য বরাদ্দ ১ টি আইসিইউ। সরকারিভাবে করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০০ শয্যা, সদর জেনারেল হাসপাতালে ১০০ শয্যা এছাড়াও বরিশাল মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে করোনা আক্রান্ত মহিলাদের চিকিৎসাসেবা প্রদানে ২০ শয্যা রয়েছে। কিন্তু আইসিইউ আছে শুধু শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই। এছাড়া বিভাগে আর কোথাও করোনা রোগীর জন্য নেই আইসিইউ সুবিধা।শের-ই-বাংলা মেডিকেলে মোট ২৬ টি আইসিইউর পাশাপাশি সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন আছে ১০৭টি বেডে।  কিন্তু সবসময়ই ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি থাকছেন। বাকি যেসব করোনা রোগী ভর্তি হন তাদের নির্ভর করতে হয় অক্সিজেন সিলিন্ডারের ওপর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইসিইউ ওয়ার্ডের একজন সেবিকা জানান, ওয়ার্ডে যেসব রোগী হাইফ্লো অক্সিজেন পান না তাদেরকে আইসিইউ ইউনিটে নিয়ে আসা হয়। বিগত ২ দিন থেকে আইসিইউ প্রয়োজন এমন অপেক্ষমাণ আছেন ১৫ জন রোগী। কিন্তু আইসিইউ বেড খালি না থাকায় সেসব রোগীদের স্থান দেয়া যাচ্ছেনা আইসিইতে। কিছু কিছু রোগী আছে যারা অনেকদিন থেকেই আইসিইউতে ভর্তি। ১৫ দিন থেকে ১ মাসেরও বেশী সময় ধরে আইসিইউতে আছেন কয়েকজন রোগী এদের মধ্যে আইসিইউ ২২ ও ২৪ নম্বর বেডের রোগী আছেন বিগত ১ মাস থেকে।

আইসিইউ প্রয়োজন এমন ৩ জন রোগীর স্বজনদের সাথে গতকাল করোনা ইউনিটে কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে। তবে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ১৫ দিন থেকে হাসপাতালে আছি। ঠিকভাবে অক্সিজেন পাচ্ছিনা। হঠাৎ করে রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন নিচে নেমে গেছে, ডাক্তার বলেছেন আইসিইউ প্রয়োজন কিন্তু আইসিইউতে খোঁজ নিয়ে জানলাম একটা বেডও খালি নাই। এতো রোগী অথচ আইসিইউ বেড অল্প কয়েকটা। যেকোন সময় রোগীর দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। হাসপাতালে এসেও যদি আইসিইউর অভাবে রোগী মারা যায় এই কষ্ট কোথায় রাখবো! "

করোনা ইউনিটের আইসিইউ চিকিৎসক ফরহাদ জানান, করোনা রোগীদের বেশিরভাগই নিউমোনিয়া হয়। এতে ফুসফুসে ইনফেকশন হয়, ফুসফুস নষ্ট হয়ে যায় এবং ফুসফুস কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে।  ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি অক্সিজেন নিতে পারে না, কার্বনডাই অক্সাইড জমা হয় সেখানে। অক্সিজেন নিতে না পারলেই রোগী মারা যায়।


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন