বরিশালে আধা ঘন্টার ব্যবধানে দুই ছাত্রীর শ্লিলতাহানীর চেষ্টা

বরিশাল নগরীতে মাত্রা ৩০ মিনিটের ব্যবধানে দুই কলেজ ছাত্রীর শ্লিলতাহানীর চেষ্টা করেছে এক বখাটে যুবক। শুক্রবার রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর বৈদ্যপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। যদিও লোকলজ্জা এবং যুবকের ভয়ে এই ঘটনায় থানা পুলিশকে অবহিত করেনি তুই তরুণী।
তবে ওই দুটি ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরেছেন সরকারি ব্রজমোহন কলেজের অপর এক ছাত্রী। ওই ছাত্রীর করা ফেসবুক পোস্ট হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘এমন ঘটনার সাক্ষি হবো ভাবি নি। একই দিনে ২টি ধর্ষণের চেষ্টা তাও সন্ধ্যা বেলায়। আজ আমাদের পরিচিত এক বড় আপু কে বৈদ্যপাড়া রাস্তায় কেউ একজন পিছন থেকে চেপে ধরে তার সাথে জোড় করতে থাকে। অবাক করার বিষয় হলো রাস্তায় মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল কিন্তু কেউ সাহায্য করেনি।
একই ঘটনা আমার বান্ধবির সাথে একই দিনে রাত ৮টায় আমার বান্ধবি তার বোনের বাসা থেকে বাসায় ফিরছিল। বৈদ্যপাড়ার প্রধান সড়কে কেউ তাকে পিছন থেকে মুখ পেচে ধরে। আমার বান্ধবি হাত সরিয়ে চিৎকার দিতে পারায় ছেলেটি পালিয়ে যায়। তখনও রাস্তার মানুষ ছিল কিন্তু কেউ সাহায্য করেনি। এইটা কি শুরু হলো। রাস্তায় বের হওয়া টা জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেয়েরা ঠিক কতটা অনিরাপদ হলে এমন ঘটনা ঘটে। সবাই সতর্ক হন আর সেয়ার দিয়ে এই ঘটনা জানিয়ে দিন। আল্লাহ হেফাজতে রেখো সব বোনেদের।
ফেসবুক পোস্টের নিচেই অভিযুক্ত যুবকের ছবি জুড়ে দিয়ে তিনি আরও লিখেছেন, নিচে এই ছবি দেয়া হলো। কেউ চিনে থাকলে জানাবেন। বৈদ্যপাড়া মোরের সিসি টিভি ফুটেজ থেকে ভিকটিম এই ছবি টি সনাক্ত করেছে। প্রতিবাদ করে সাথে থাকুন।
ফেসবুক পোস্টের সূত্র ধরে যোগাযোগ করা হয় ভুক্তভোগী বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ফিন্যান্স এন্ড মার্কেটিং বিভাগের ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি এই এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করি। শুক্রবার রাতে বাসা দেখার জন্য ঘর থেকে বের হই। বাসা থেকে ফেরার পথে এক যুবক পেছন থেকে এসে ঝাপটে ধরে।
তিনি বলেন, ‘আমি অনেকটা জোড়াজুড়ি করে তার কাছ থেকে রক্ষা পেয়েছি। এসময় আমি চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। স্থানীয় অনেকেই ছিলেন যারা ঘটনাটি দাঁড়িয়ে থেকে দেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনা শুধুমাত্র আমার সাথেই ঘটেনি। বরং একই রাতে মাত্র আধাঘন্টার ব্যবধানে বিএম কলেজের অপর এক শিক্ষার্থীর সাথে একই ঘটনা ঘটেছে। ওই শিক্ষার্থী বিএম কলেজে অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী। তিনি বিএম কলেজ পকেট গেট এলাকার একটি মেসে থাকেন।
শিক্ষার্থী বলেন, ঘটনার পরে ঘটনাস্থলের পাশের একটি বাড়ি থেকে সিসি টিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। ওই ছেলেটিকে শনিবার বিকেলেও একই এলাকায় আমরা দেখতে পেয়েছি। তবে আমাদের দেখে সে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে কেটে পড়ে। অবশ্য স্থানীয় লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়নি। অন্তত এলাকার শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য হলেও এ বিষয়ে আইনের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে কথা হয় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম এর সাথে। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোন অভিযোগ আমরা পাইনি। তবে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকের কাছ থেকে ঘটনা শুনে অভিযুক্তদের শনাক্ত এবং ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।
কেআর