দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্ববাজারে দুই দফায় কমেছে তেলের দাম
বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত তেলের আমদানিকারক চীনের চাহিদা কমে যাওয়ায় বিশ্ববাজারে কমছে জ্বালানি তেলের দাম। আজ সোমবার দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্ববাজারে দুই দফায় কমেছে তেলের দাম। বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক সৌদি আরবের আরামকোর প্রধান বলেছেন, তেল উৎপাদনের জন্য তারা প্রস্তুত।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের দাম প্রতি ব্যারেলে (এক ব্যারেল সমান ১৫৯ লিটার) ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে ৯৭ দশমিক ১ ডলারে নেমেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের প্রতি ব্যারেলের দাম কমে ৯১ দশমিক ৩ ডলার হয়েছে। এর আগের সেশনে এই তেলের দাম ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে যায়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর থেকে মন্দাভাব শুরু হয় জ্বালানি তেলের বাজারে। জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণকারী বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম কমেছে।
চীনের সরকারি তথ্যমতে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অপ্রত্যাশিত ধীরগতির কারণে জুলাইয়ে দেশটিতে দৈনিক তেল পরিশোধনের পরিমাণ ১ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার (১২.৫৩ মিলিয়ন) ব্যারেলে নেমেছে। এটি ২০২০ সালের মার্চের পর দেশটিতে দৈনিক সর্বনিম্ন তেল পরিশোধন। জুলাইয়ে করোনা মহামারির প্রকোপ বেড়ে গেলে নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করায় আবারও তেল পরিশোধনের পরিমাণ কমে যায়।
বিশ্বের শীর্ষ ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিস ইনভেস্টরস সার্ভিসের অর্থনীতিবিদ হেরন লিন বলেন, ‘চীনের সরকারি তথ্য-উপাত্তে তেলের রেকর্ড দামের কারণে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ এবং ভোক্তাদের চাহিদা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
রোববার গণমাধ্যমে সৌদি আরামকোর প্রধান নির্বাহী আমিন নাসের বলেন, ‘সৌদি সরকারের কাছ থেকে চাহিদা পেলে আরামকো দৈনিক সর্বোচ্চ ১ কোটি ২০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সরকার অথবা জ্বালানি মন্ত্রণালয় আমাদের চাহিদার হিসেব জানালে আমরা যেকোনো সময় দিনে এক কোটি ২০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত আছি। চীনে করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ শিথিল ও বিমান পরিবহন পুনরায় শুরু করায় জ্বালানির চাহিদা বৃদ্ধি পেতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মেক্সিকো উপসাগরের ক্ষতিগ্রস্ত পাইপলাইন শুক্রবার রাতে মেরামত করা হয়েছে। এতে কিছু উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তাদের বন্ধ হয়ে যাওয়া উৎপাদন পুনরায় শুরু করেছে।’
চলতি শীতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল এবং পরিশোধিত জ্বালানি সরবরাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী তেলের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। তবে ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ের প্রস্তাব যদি ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করে, সেক্ষেত্রে তেলের সরবরাহ বাড়তে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত হলে ইরানের তেল রপ্তানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হবে।
এএজে