এক হলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২ বিভাগ


স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা ও সুরক্ষা সেবা বিভাগকে একত্রিত করা হয়েছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রকাশিত গেজেটে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এতে সই করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ।
গেজেটে বলা হয়েছে, এস. আর. ও. নম্বর ৩৫৮-আইন/২০২৫। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৫(৬) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি ‘রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬’-এর নিম্নরূপ অধিকতর সংশোধন করলেন, যথা– উপর্যুক্ত রুলসের(ক) শিডিউল-১ (অ্যালোকেশন অব বিজনেস এমাং দ্য ডিফরেন্ট মিনিস্ট্রিস অ্যান্ড ডিভিশন)-এর সিরিয়াল নাম্বার “২৩. মিনিস্ট্রি অব হােম অ্যাফেয়ার্স” শিরোনাম এবং উপশিরোনাম “এ. পাবলিক সিকিউরিটি ডিভিশন” ও তৎসংশ্লিষ্ট এন্ট্রিসমূহ এবং উপশিরোনাম “বি. সিকিউরিটি অব সার্ভিসেস ডিভিশন” ও তৎসংশ্লিষ্ট এন্ট্রিসমূহের পরিবর্তে নিম্নরূপ শিরোনাম ও এন্ট্রিসমূহ প্রতিস্থাপিত হবে। যথা- মিনিস্ট্রি অব হােম অ্যাফেয়ার্স।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬- এ সংশোধন এনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধি নতুনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৫৫(৬) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ সংশোধন অনুমোদন দিয়েছেন।
নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন থেকে দেশের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কার্যক্রম, পুলিশ ও সশস্ত্র পুলিশ, রেলওয়ে ও বন্দর পুলিশ, সীমান্ত রক্ষী বাহিনী, আনসার-ভিডিপি এবং অন্যান্য আধাসামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে দায়িত্বশীল থাকবে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় (যেমন ইন্টারপোল)-সংক্রান্ত বিষয়গুলোও এ মন্ত্রণালয়ের অধীনে আসবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিদেশি নাগরিকদের ডোমিসাইল, নাগরিকত্ব, ন্যাচারালাইজেশন, বাংলাদেশে প্রবেশ ও প্রস্থানের নীতি নির্ধারণ, পাসপোর্ট-ভিসা প্রদান, প্রত্যর্পণ (এক্সটার্ডিশন) এবং নিষ্ক্রমণ (এক্সটার্নমেন্ট) প্রক্রিয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায় থাকবে। একই সঙ্গে প্রিভেন্টিভ ডিটেনশন বা প্রতিরোধমূলক আটক, কারাগার ও সংশোধনাগার ব্যবস্থাপনাও এ মন্ত্রণালয় দেখভাল করবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে– দেশে নেশাজাতীয় দ্রব্যের প্রবেশ প্রতিরোধ, চোরাচালানবিরোধী কার্যক্রম, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ অগ্নিনির্বাপক ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এছাড়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং কোস্ট গার্ড পরিচালনা ও প্রশাসনিক দায়িত্বও তাদের হাতে থাকবে।
বিশেষ আইন, পুরস্কার ও ভিআইপি সুরক্ষা: নতুন কাঠামোয় বিশেষভাবে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে– ভিআইপি ও ভিভিআইপি নিরাপত্তা, বীরত্ব পদক ও গ্যালান্ট্রি অ্যাওয়ার্ড প্রদান, অস্ত্র আইন, বিস্ফোরক আইন, ফিল্ড ফায়ারিং ও আর্টিলারি প্র্যাকটিস আইন বাস্তবায়ন। এছাড়া পুলিশের পুরস্কার প্রদান, পুলিশ কমিশনের কার্যক্রম, ফরেনসিক ল্যাবরেটরি ও বিষবিজ্ঞান বিষয়ক দায়িত্বও মন্ত্রণালয় পালন করবে।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন আইন অনুযায়ী আইনসিদ্ধ যোগাযোগ নজরদারি ও মনিটরিং কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তত্ত্বাবধান করবে। আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ, বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত চুক্তি ও সমঝোতাপত্র, জাতীয় উৎসব, রাজনৈতিক পেনশন এবং বেসামরিক ইউনিফর্ম নীতিমালাও এর আওতায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলরা বলছেন, এই সংশোধন দেশের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও সমন্বিতভাবে পরিচালনার সুযোগ তৈরি করবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এখন ‘এক ছাতার নিচে’ গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থার নেতৃত্ব দিতে হবে।
এইচকেআর
