ঢাকা শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

Motobad news

ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটে ফের চালু হচ্ছে শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার

ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটে ফের চালু হচ্ছে শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটে পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টিমার পি এস মাহসুদ। এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও নদীভিত্তিক পর্যটনের এক অনন্য মেলবন্ধন হতে যাচ্ছে।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর সদরঘাট থেকে ঢাকা–মুন্সিগঞ্জ রুটে ‘পি এস মাহসুদ’-এর পরীক্ষামূলক যাত্রায় অংশ নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, স্টিমারটি এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আজকের ট্রায়াল ট্রিপের মাধ্যমে যান্ত্রিক ও নেভিগেশন সক্ষমতা যাচাই করা হচ্ছে। আগামী ১৫ নভেম্বর জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে পিএস মাহসুদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। এরপর এটি নিয়মিত পর্যটন সার্ভিস হিসেবে চলাচল শুরু করবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শতবর্ষী ঐতিহ্যের এ স্টিমারকে ঢাকা–বরিশাল নৌরুটে আগামী মাস থেকে নদীকেন্দ্রিক পর্যটন সার্ভিসে যুক্ত করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন সংরক্ষণের পর আধুনিক সুবিধা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন রূপে নদীপথে ফিরছে এ ঐতিহ্যবাহী জলযান।

ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পি এস মাহসুদ কেবল একটি নৌযান নয়, এটি বাংলাদেশের নদীজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক। আমরা চাই নতুন প্রজন্ম কাছ থেকে দেখুক, কীভাবে একসময় নদীপথই ছিল যোগাযোগ ও সংস্কৃতির প্রাণ।

উপদেষ্টা জানান, ‘পি এস মাহসুদ’-এর পাশাপাশি পি.এস অস্ট্রিচ, পি.এস লেপচা ও পি.এস টার্নসহ আরও কয়েকটি পুরোনো স্টিমার সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য হলো- নদীপথের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও নদীভিত্তিক পর্যটনের সম্ভাবনাকে বিস্তৃত করা।

তিনি বলেন, একসময় নদী ছিল বাঙালির জীবনরেখা। আমরা চাই মানুষ আবার নদীর সঙ্গে সেই সম্পর্ক নতুনভাবে আবিষ্কার করুক। ‘পি এস মাহসুদ’ সেই সম্পর্কেরই প্রতীক হয়ে ফিরছে- এটি চলমান ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি।

জানা গেছে, স্টিমারটির সংস্কার ও আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ায় মূল কাঠামো ও ঐতিহাসিক নকশা অক্ষুণ্ণ রেখে ইঞ্জিন, নিরাপত্তা ও ফায়ার সেফটি সিস্টেম সম্পূর্ণ নবায়ন করা হয়েছে। এতে রয়েছে আধুনিক কেবিন, পর্যটক-বান্ধব ডেক এবং ডিজিটাল নেভিগেশন ব্যবস্থা। স্টিমারটি প্রতি শুক্রবার ঢাকা থেকে বরিশাল এবং শনিবার বরিশাল থেকে ঢাকা রুটে চলবে। যাত্রীরা উপভোগ করতে পারবেন নদীর সৌন্দর্য, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক অনন্য ভ্রমণ অভিজ্ঞতা।

নিরাপত্তা নিশ্চিতে এতে সংযোজন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা সরঞ্জাম, লাইফ বোট, ফায়ার সেফটি ও জিপিএস ব্যবস্থা। ইঞ্জিনে ব্যবহৃত হয়েছে কম ধোঁয়া নির্গমনকারী প্রযুক্তি, যা নদীপথে দূষণ হ্রাসে সহায়ক হবে। স্টিমার পরিচালনায় থাকবেন ২৫ জন প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা ও নাবিক।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব দেলোয়ারা বেগম, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মো. সলিম উল্লাহসহ মন্ত্রণালয় ও দপ্তর- সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন