আমতলীসহ উপকূলীয় এলাকা থেকে হারিয়ে গেছে হরিয়াল পাখি


হারিয়ে যাচ্ছে হরিয়াল। লাজুক বৃক্ষবাসী রূপসী পাখির নাম হরিয়াল। এক সময় প্রচুর দেখা মিলতো গ্রামে। দলবেঁধে উড়ে এসে বসতো গ্রামের বিভিন্ন গাছের ডালে ডালে।
বটগাছের লাল ফল ছিল প্রিয় হরিয়ালের । কিশোরদের দৃষ্টি পড়লে রেহাই পেত না হরিয়াল। সেই হরিয়াল এখন কোথায় কুজেও পাওয়া যায়না। হলুদ, বেগুনি, আর কমলা রংয়ের বাহারি হরিয়াল আমতলীসহ উপকূলীয় এলাকার গাছে দেখা যেত এ বর্ষাকালে হরিয়াল বাসা বাধে ও ডিম পাড়ে।
হরিয়ালের ইংরেজী নাম ‘গ্রীন পিজন’ এবং বৈজ্ঞানিক নাম ‘ট্রেরন। গ্রামাঞ্চলে বটগাছ, ডুমুর(বহই) গাছে বসতো। দল বেঁধে উড়তো। খঁড়কুটো, মরা ডালপালা, পাতা দিয়ে এরা বাসা বাঁধে। এদের প্রধান খাদ্য ফল। এছাড়া বাদাম ও বীজ খেতে পছন্দ করে।
এদের ডানা লম্বা, গোলাকার ও সুঁচালো। বলিষ্ঠ পা, বেশ খাটো। পায়ের তলায় মাংসল গদি থাকে। যা চলাফেরায় উপযোগী। স্ত্রী ও পুরুষ হরিয়ালের চেহারায় তফাৎ রয়েছে।
গ্রামের বড় বটগাছ ও ডুমুর (বহই) গাছ ইটভাটায় ধ্বংস হওয়ায় হরিয়াল পাখি মুলত উধাও হয়ে গেছে ।
আমতলী সরকারী কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মো. ফজলুল হক বলেন, যে কোন প্রাণীর প্রধান অগ্রাধিকার খাদ্য ও বাসস্থান। যখন এ দু’টো সংকট হয় তখনই তারা হয় অনত্র সরে যায় অথবা বিলুপ্ত হয়।
তিনি বলেন, আমারা তো প্রকৃতি ধ্বংসে মেতেছি। কাজেই হরিয়াল কেন, অনেক কিছুই হারাবো।
আমতলীর প্রবিন ব্যক্তি মো. সামসুদ্দিন বলেন এ পাখি আগে সচরাচর দেখা গেলেও এখন আর তেমন দেখা যায় না মানবসম্পদের প্রয়োজনে বট, খেজুর, ডুমুর ও গাছ কেটে ফেলার কারণে তাদের আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। গাছ সংরক্ষণ ও জনসচেতনতা গড়ে তুলতে পারলে এই বিরল প্রজাতির পাখি সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।
আমতলী সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রভাষক মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, হরিয়ালকে ছাত্রজীবনে গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন বট,ডুমুর গাছে ঝুলে ঝুলে ফল খেতে দেখতাম। জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রকৃতিগত কারনে তবে অনেক দিন ধরে এই পাখি হরিয়াল পাখি বিলুপ্তির পথে ।
এইচকেআর
