ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

Motobad news

গ্রীষ্মের তাপদাহে পিরোজপুরে কৃষকের বোরো ধান পুড়ে খোসা

গ্রীষ্মের তাপদাহে পিরোজপুরে কৃষকের বোরো ধান পুড়ে খোসা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

সূর্যের তাপদাহে বাড়ি থেকে বের হওয়া মুশকিল। বাড়ি থেকে বের হলেই মনে হয় যেনো আগুনের উপর থেকে হাটছি বা মাথার উপর আগুন জ¦লছে। গরমের জন্য অতিষ্ঠ মানবজাতিসহ পশুপাখি আর গাছ পালাও। এদিকে কৃষকের মাঠে তো রয়েছে পাকা ধান। সেই ধান ঠিক সময়ে ঘরে না তুলতে পারলেই গরম বাতাস ও গরম আবহাওয়ার কারনে খোসা হয়ে যাচ্ছে ধান। কাঁচা আম এখনই পাঁকা আমের মতো হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে।

বলছিলাম পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের কথা। প্রতিটি জীবই তাকিয়ে আছে মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতের দিকে। কখন একটু বৃষ্টি হবে। প্রচন্ড তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে শত শত হেক্টর ফসলের মাঠ। অনাবৃষ্টি ও তাপদাহ যেন কেড়ে নিয়েছে এখানকার কৃষকের মুখের হাসি। খাল-বিলে পানি কমে যাওয়ায় ফসলের ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। ফসল শুকিয়ে মরে যাচ্ছে।

জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে ২৪ হাজার ৫৩৩ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৫৫০ মেট্রিকটন। গত বছরের তুলনায় এবার ১ হাজার হেক্টর জমিতে বেশি চাষ বেশি হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের ৭ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমির ধান কর্তন করা হয়ে গেছে। এবছর গড় ফলন ৪.৭১ মেট্রিকটন। মাঠে ধানের অবস্থা মোটামুটি ভালো। কৃষকরা ধান কাটছেন, কৃষি শ্রমিকের কোন ঘাটতি নাই। তাছাড়া প্রত্যেকটি উপজেলায় কম্বাইন্ড হারভেষ্টার মেশিন আছে। এখানে ধানের ফুল অবস্থায় হিট ওয়েভের কারনে সারাদেশে যে ক্ষতি হয়েছে তাতে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ৫ হেক্টর জমিতে ক্ষতি হয়েছে। বিশেস করে বিপিএইচ ও মাজা পোকার আক্রমনে ধানের ক্ষতি হয়েছিল। আগামী ১৫ দিনে মধ্যে কৃষক সব ধান কেটে রোগ বালাই ছাড়াই ঘরে তুলতে পারবে।

বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, প্রয়োজনীয় পানির অভাবে ও তীব্র রোদের তাপে ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং মাঠ ফেটে চৌচির। আবার অনেক ক্ষেতে জোয়ারের পানি ঢুকলেও লোনা পানির কারণে হলদে হয়ে যাচ্ছে গাছগুলো। এতে এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকরা লোকশানের মুখে পড়বেন। এ বছর এপ্রিলের ২৬ তারিখ পর্যন্ত কোনো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফসল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খোসা হয়ে আছে। এই বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে যেখানে মাঠঘাট পানিতে ডুবে থাকে অথবা অতি বৃষ্টি হয়, সেখানে টানা খরা, রোদ আর বৈশাখী খরতাপে চাষিরা এবার দুর্ভাবনায় পড়েছেন।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা জানিয়েছেন, রোদের তাপের কারনে ধান সাদা হয়ে গেছে, তার মধ্যে কোন শষ্য নাই। ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে গরমের কারনে জীবন অতিষ্ঠ। বৃষ্টি নাই, পানিও নাই। তার মধ্যে মাঝে মাঝেই গরম বাতাস। সেই বাতাসে সব ভালো ফসলও পুড়ে নষ্ট হচ্ছে।

পিরোজপুর জেলা কৃষি অফিসার চিন্ময় রায় জানান, পিরোজপুর জেলায় বোরো ধান আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৩ হাজার ৫০০ হেক্টর কিন্তু আমরা অর্জন করেছি ২৪ হাজার ৫৩৩ হেক্টর। অতিরিক্ত ১ হাজার হেক্টর জমিতে আমরা বেরো ধানের আবাদ বেশি করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের মাঠ পর্যায়ের ৭ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমির ধান কর্তন করা হয়ে গেছে। আমরা এবছর গড় ফলন পেয়েছি ৪.৭১ মেট্রিকটন। জেলায় ২৩ ৫০০ হেক্টর জমিতে উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিণল ১ লক্ষ ২হাজার ১০২ মেট্রিকটন চাল। আবহাওয়া প্রতিকুলে থাাকায় সেখানে লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৫৫০ মেট্রিকটন হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো জানান, মাঠে ধানের অবস্থা মোটামুটি ভালো। কৃষকরা ধান কাটছেন, কৃষি শ্রমিকের কোন ঘাটতি নাই। তাছাড়া প্রত্যেকটি উপজেলায় কম্বাইন্ড হারভেষ্টার মেশিন আছে। এখানে ধানের ফুল অবস্থায় হিট ওয়েভের কারনে সারাদেশে যে ক্ষতি হয়েছে তাতে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ৫ হেক্টর জমিতে ক্ষতি হয়েছে। বিশেস করে বিপিএইচ ও মাজা পোকার আক্রমনে ধানের ক্ষতি হয়েছিল। আশা করি আগামী ১৫ দিনে মধ্যে কৃষক সব ধান কেটে রোগ বালাই ছাড়াই ঘরে তুলতে পারবে।  


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন