ঢাকা রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫

Motobad news

জরাজীর্ণ ভবনে চলছে আদালতের কার্যক্রম

জরাজীর্ণ ভবনে চলছে আদালতের কার্যক্রম
ঝালকাঠি জেলা জজ আদালত ভবনে বিচারপ্রার্থীরা যাতে দুর্ঘটনার শিকার না হন, সে জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় না যাওয়ার জন্য বাঁশ বেঁধে রাখা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে তোলা। ছবি সংগৃহীত
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন স্থানের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। ফলে বিচারক, আইনজীবী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ আদালতপাড়ায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ঝুঁকি নিয়ে এই ভবনে কাজ করছেন।

গত এক সপ্তাহে কয়েকবার আদালত ভবনের নিচতলার গারদখানা সামনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। এ ছাড়া নিচতলার নামাজের ঘরের সামনে, শৌচাগারের সামনে, দ্বিতীয় তলার জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ সদর আদালতের সামনের ছাদের বড় অংশের পলেস্তারা খসে পড়েছে। তবে আদালতের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর এই পলেস্তারা খসে পড়ায় কেউ হতাহত হয়নি।

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, তিনতলা ভবনটির নিচতলায় হাজতখানা, প্রশাসনিক কার্যালয় রয়েছে। দোতলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত, প্রথম ও দ্বিতীয় যুগ্ম জজ আদালত, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ঝালকাঠি সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, নলছিটি সহকারী জজ আদালত ও কাঠালিয়া সহকারী জজ আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। দোতলার সব কটি আদালতে দেওয়ানি ও আপিল-সংক্রান্ত মোকদ্দমাগুলো পরিচালিত হয়। 

তৃতীয় তলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও তাঁর অধস্তন আদালতে জেলার ফৌজদারি অপরাধের মামলাগুলোর বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এর মধ্যে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম এই ভবন থেকে সরিয়ে নিতে পাশেই আটতলা ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। তবে সেই কাজের মেয়াদ তিন বছর আগে শেষ হলেও এখনো কাজ শেষ হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আদালতের প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে প্রতিদিনই বিকট শব্দে পলেস্তারা খুলে পড়ছে। এতে বিচারক, আইনজীবী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ আদালতপাড়ায় দায়িত্বরত পুলিশ সবাই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। আদালতে আসা বিচারপ্রার্থীরা যাতে দুর্ঘটনার শিকার না হন, সে জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় না যাওয়ার জন্য বাঁশ বেঁধে রাখা হয়েছে।

এদিকে নতুন ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পুরোনো ভবন থেকে সরে গেলেও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের কার্যক্রম জরাজীর্ণ পুরোনো ভবনেই থেকে যাবে। এ জন্য কোনো নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ‘জজ আদালতের ভবনটি অনেক আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। আদালত কার্যালয়ের ছাদসহ বিভিন্ন স্থানের পলেস্তারা প্রায়ই খসে পড়ছে। এ কারণে কাজ করার সময় আমাদের আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। ভবনটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত।’

ঝালকাঠি গণপূর্ত কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৭ সালে জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের কাজ শুরু হয়। ১৯৯৩ সালে দ্বিতল ভবনের কাজ শেষ হলে তৎকালীন আইন ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী মীর্জা গোলাম হাফিজ এ ভবনের উদ্বোধন করেন। ২০০৫ সালে অপরিকল্পিতভাবে ভবনের তৃতীয় তলা নির্মাণ করা হয়। এর পর থেকে দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ঝালকাঠি জেলা জজ আদালত ভবনটি এখন জরাজীর্ণ হয়ে গেছে।

সূত্র আরও জানায়, প্রায় ৪০ কোটি টাকায় নতুন আটতলা ভবনের কাজ ২০১৭ সালের ১৫ এপ্রিল শুরু হয়। ২০২০ সালে জুনে এই কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইসলাম ব্রাদার্স। এই ভবনের কাজ শেষ হলেই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও তাঁর অধস্তন আদালতের সব বিচারিক কার্যক্রম এখানে শুরু হবে। সে ক্ষেত্রে জেলা জজ আদালত ভবনের অনেক কক্ষ ফাঁকা হয়ে যাবে। ভবনের ওপর অনেকটা চাপ কমে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। 

ঝালকাঠি গণপূর্ত কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৭ সালে জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের কাজ শুরু হয়। ১৯৯৩ সালে দ্বিতল ভবনের কাজ শেষ হলে তৎকালীন আইন ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী মীর্জা গোলাম হাফিজ এ ভবনের উদ্বোধন করেন। ২০০৫ সালে অপরিকল্পিতভাবে ভবনের তৃতীয় তলা নির্মাণ করা হয়। সেই তৃতীয় তলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও তাঁর অধস্তন আদালতের সব বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এর পর থেকে দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ঝালকাঠি জেলা জজ আদালত ভবনটি এখন জরাজীর্ণ হয়ে গেছে।

কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির বলেন, ‘প্রতিদিন ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। এতে আমাদের পুলিশ সদস্যরা দায়িত্বরত অবস্থায় ঝুঁকির মধ্যে থাকেন।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলম বলেন, গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীদের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আদালত ভবনটি পুরোনো হওয়ায় এটি নাজুক হয়ে পড়েছে। ধসে পড়া অংশ জরুরি মেরামত করে আদালতের কার্যক্রম চালু রাখার ব্যবস্থা করা হবে। নতুন আরেকটি ভবন করতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র: প্রথম আলো


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন