বরিশালে সরকারি লক্ষ্যমাত্রার ২৫ ভাগ ধানও সংগ্রহ হয়নি

বরিশালে আমন মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহের অধিকাংশ সময় শেষ প্রায় শেষ হলেও এখনো ২৫ শতাংশ ধানও সংগ্রহ হয়নি। চাল সংগ্রহ কিছুটা এগুলেও ধান সংগ্রহ কার্যক্রম প্রায় ভেস্তে যেতে বসেছে। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
বরিশাল বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আমন মৌসুমে বিভাগে ৪৪ টাকা কেজি দরে চাল আর ৩০ টাকা কেজি দরে ধান কিনছে সরকার।
গত বছরের গত ২৩ নভেম্বর থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শেষ হবে চলতি বছরের ২৯ ফেব্রæয়ারি। বিভাগের ৯২টি গুদামের ভিতরে ৭১ সরকারি খাদ্য গুদামের মাধ্যমে ১৫ হাজার ৮০৬ মেট্রিক টন চাল আর ২০ হাজার ১০৬ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে এই কার্যক্রম শুরু হয়।
এর মধ্যে ভোলার একটি গুদামে ১৫ হাজার ২৫ টন চাল ও ৯০৯ টন ধান মজুত রয়েছে। এছাড়া সেখানে ৯ হাজার ১৩৬ টন চাল এবং ১৬২৯ টন ধান সরকার নির্ধারিত দামে সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের প্রধান সহকারী মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ মিল মালিক সরকারি গুদামে চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল সংগ্রহ করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
মিলাররা তাদের চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহের পর অতিরিক্ত বরাদ্দ চাইলে সরবরাহের জন্য এরকম বরাদ্দ দেওয়া হতে পারে বলে জানান বিভাগীয় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের প্রধান সহকারী মিজানুর রহমান।
এর আগে গত বছরের ৭ মে থেকে এই কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত ৩৪ হাজার ১১৫ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছিল।
তবে মিলাররা বলছেন, এ দামে ধান সরবরাহ করা লোকসানের সামিল।
বিভাগীয় চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার মাহমুদ নিয়াজ বলেন, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে চালের উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় লোকসানের ভয়ে মিলাররা সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করতে আগ্রহী হচ্ছেন না।
এদিকে কৃষকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে ১,১৫০ থেকে ১,২০০ টাকা পর্যন্ত শুকনো ধানের মণ বিক্রি হচ্ছে। সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করে মণপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কম পাওয়া যাচ্ছে।
আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সারহাট গ্রামের কৃষক মনির হোসেন বলেন, সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করতে গেলে দাম কম ছাড়াও টাকা পেতে দেরি হয়। পরিবহন খরচ বেশি। ভোগান্তিও পোহাতে হয় অনেক। এসব কারণেই সরকারি গুদামে চাল সরবরাহে কৃষকদের আগ্রহ নেই।
এ ব্যাপারে বিভাগীয় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, যে মিলাররা চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই অটোরাইস মিলের চাল সরবরাহকারী।
অধিকাংশ রাইস মিলে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় তারা সরকার-নির্ধারিত মূল্যে চাল সরবরাহ করতে পারছে বলে মনে করেন তিনি। তবে এই সময়ের মধ্যে সংগ্রহের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলে মিলারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএন