হিজলায় হামলা মামলায় নিঃস্ব কয়েকটি পরিবার

হিজলা উপজেলার ধুলখোলা ইউনিয়নে স্থানীয় রাজনীতির প্রতিহিংসায় হামলা-মামলার শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছে কয়েকটি পরিবার।
জানা যায়, উপজেলার নদী বিচ্ছিন্ন একটি জনপদ ধুলখোলা ইউনিয়নের আলিগঞ্জ। আওয়ামী রাজনীতিতে যখন টানাপোড়া ও দলীয় আভ্যন্তরীণ কোন্দলে ধুলখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ দুইভাগে বিভক্ত হয়।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বেপারী স্থানীয় সাংসদ পংকজ অনুসারী হয়ে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে।
একই এলাকার উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক বর্তমান ধুলখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ঢালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ অনুসারী।
২০২১ সালে পার্শ্ববর্তী মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া ইউনিয়নের আলতু সরদার ও মিজান মোল্লা গ্রুপের সাথে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় পৃথক পৃথকভাবে দুটি মামলা হয়।
আর সেই মামলায় জড়ানো হয়েছে ধুলখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বেপারী সহ ৬৬ জন আওয়ামী লীগে নেতাকর্মীকে। তখন আসামিরা এলাকা থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যান।
এর কিছুদিন পরে ওই এলাকায় জামাল উদ্দিন ঢালীর কুটকৌশলে মানসিক ভারসাম্যহীন সিদ্দিক কবিরাজ ও সত্তার ঢালীকে হত্যা করা হয়। আর ওই মামলায় আসামি করা হয় কালাম বেপারী সহ ১৪ জনকে। এই সুযোগে সৃষ্টি হয় জামাল উদ্দিন ঢালির নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী।
ওই বাহিনীর সন্ত্রাসী নিজাম, সালাউদ্দিন, বাবু, রফিক, আফসার, হাবিব, সবুজ ঢালী ও মিরাজ গোলদারসহ কয়েকজনে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।
শুরুতেই আলিগঞ্জ বাজারের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা কালাম, জাফর, সুমন, মাসুম, দেলোয়ার সহ অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল সহ প্রায় আড়াই কোটি টাকা লুট করে নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে নিজু ও ছালা বাহিনীরা।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুট করেই ক্ষান্ত হয়নি এই চক্রটি ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেকের বাড়িঘর লুট করে ভাঙচুর করে। এমনকি স্থানীয় জেলে মাইনুদ্দিন, কবির, বাবুল, খলিল, রাসেল, রফিক সহ কয়েকজনের রুটি রোজগারের একমাত্র অবলম্বন নৌকাসহ জালের সাভার নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ধুলখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বেপারী জানান, আওয়ামী লীগ করে সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে এলাকায় আসতে পারেনি আড়াই বছর।
তিনি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদের লুট করে নেয়া সকল মালামাল ফেরত সহ বিচারের দাবি জানান।
এদিকে চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক জামাল উদ্দিন ঢালী বলেন, ভাঙচুর লুটপাটের কোন বিষয় তার এলাকায় ঘটেনি। তাকে সামাজিক ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই মূলত এই ষড়যন্ত্র।
এ সকল বিষয় নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেন হিজলা সরকারি কমিশনার (ভূমি) ও সহকারী পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে হিজলা থানার অফিসার ইনচার্জ জুবাইর আহমেদ বলেন, তিনি আসার আগের ঘটনাগুলো ঘটেছে। তবে বর্তমানে এলাকার আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে।
এইচকেআর