পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়েও পা রাখা যাবে ‘চাঁদের মাটি’তে!
দূর আকাশের চাঁদকে ধরতে এখন আর বেগ পেতে হবে না। স্পেসশিপে চড়ে মহাকাশ ঘুরতে বিশাল পরিমাণ অর্থও খরচ করতে হবে না। কারণ পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়েও চাঁদের মাটিতে পা রাখতে পারবেন আপনি। ভাবছেন কীভাবে, তাই তো!
চাঁদে যাওয়ার স্বপ্ন কমবেশি অনেকেরই রয়েছে। কিন্তু অর্থের অভাবে এ আশা কখনই যেন পূরণ হওয়ার নয়। এমনটা যারা ভাবেন তারা কিন্তু অন্য এক উপায়ে চাঁদের মাটিতে পা রাখতে পারেন।
এজন্য অবশ্য আপনাকে দূরদেশে পাড়ি জমাতে হবে না। পাশের দেশ ভারতের রাজস্থানেই রয়েছে চাঁদের অবস্থান। এজন্য ভারতের আজমের জেলা থেকে যাত্রা শুরু করতে হবে। জয়পুর যাওয়ার পথে পড়বে ছোট্ট শহর কিষাণগড়।
জয়পুর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে কিষাণগড় ‘গোলাপি শহর’ হিসেবেও পরিচিত। এখানেই রয়েছে ‘চাঁদের মাটি’। ইংরেজিতে এ স্থান ‘মুন ল্যান্ড’ নামে পরিচিত।
পর্যটকদের কাছে এ জায়গা বেশ জনপ্রিয়। নানা ধরনের মার্বেলের গুঁড়া দিয়ে তৈরি হয়েছে এ ‘মুন ল্যান্ড’। চাঁদের মতো ধবধবে সাদা এ শহরে পা রাখতে প্রতি বছরই পর্যটকরা এখানে ভিড় জমান।
আপনি কি জানেন, বর্জ্য ফেলার স্থান এই ‘মুন ল্যান্ড’। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাজস্থান মার্বেল পাথরের জন্য বিখ্যাত। তাই ওই শহরে প্রায় সব লোকই মার্বেল পাথরের ব্যবসা করেন। নির্মাণ কাজের জন্য এখান থেকেই সারা দেশ ও বিদেশে মার্বেলের সরবরাহ করা হয়।
কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় অন্য জায়গায়। মার্বেল জায়গামতো পাঠাতে হলে তা কেটে পাঠাতে হয়। কাটার পর বেরিয়ে আসে মার্বেলের গুঁড়া। যা কোথায় ফেলা হবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েন রাজস্থানবাসী।
এরপর সিদ্ধান্ত হয় কিষাণগড়ের এক বিস্তীর্ণ এলাকায় ফেলা হবে সব মার্বেলের গুঁড়া। ২০০৩ সাল থেকে রাজস্থানবাসী এখানেই মার্বেলের গুঁড়া ফেলে আসছে। এ কারণে এ স্থানটি ‘ভাগাড়’ নামেও পরিচিত।
কিন্তু বছর ঘুরতেই দেখা গেল, ভাগাড়ের সৌন্দর্য টেক্কা দিচ্ছে দেশ-বিদেশের দর্শনীয় স্থানকে। কেননা ছোট ছোট জলাশয়ের আশপাশে মার্বেলের গুঁড়া পড়ে তৈরি হয়েছে ঢেউ খেলানো টিলা। হঠাৎ দেখলে মনে হবে তুষার আবৃত কোনো দেশে কিংবা চাঁদের মাটিতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন আপনি।
দর্শনার্থীরা ‘মুন ল্যান্ড’ নামের এ ভাগাড়ে ছবি আর ভিডিও করতেই বেশি আসেন। তাই তাদের জন্য এ স্থান ঘরে দেখার জন্য গেট খুলে দেয়া হয় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। কম পয়সায় চাইলে আপনিও একবার ঘুরে আসতে পারেন ‘মুন ল্যান্ড’। পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়েই উপভোগ করতে পারেন ‘চাঁদের মাটি’-র সৌন্দর্য।
এইচকেআর