ঢাকা সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news

আলোকিত পৌরসভা গড়তে চান বাউফলের মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল

আলোকিত পৌরসভা গড়তে চান বাউফলের মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বাউফল পৌরসভাকে “আলোকিত বাউফল পৌরসভা করতে চাই”। পৌরবাসীর জন্য শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা, উন্নত যাতায়াতসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা এবং পৌরসভা থেকে পৌরবাসীরা যাতে আধুনিক সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা পেতে পারেন সে লক্ষেই কাজ করে যাচ্ছি। পৌরবাসীরা যাতে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারে সে জন্য মাদক ও সন্ত্রাসকে চিরতরে নির্মূল করতে চাই। পৌর কার্যালয়কে শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত রাখতে চাই। 

ভোরের কাগজের সাথে সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলেছেন পটুয়াখালীর বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল। তিনি বলেন, ২০০১ সালে বাউফল পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর ২০১২ সালের নির্বাচনে আমার নির্বাচনী ইসতেহারে অন্যতম অঙ্গীকার ছিল আলোকিত বাউফল পৌরসভা গড়ার। নির্বাচনের পর ২ জুন আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে বাউফল পৌরসভাকে আলোকিত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করি। বর্তমানে বাউফল পৌরসভার আয়োতন ৬.৫ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় পঞ্চাশ হাজার। ২০১৬ সালে বাউফল পৌরসভা “এ” গ্রেডে উন্নীত হয়েছে। 

বাউফল পৌরসভা “এ” গ্রেডে উন্নীত হওয়ার পর পৌরভবন নির্মাণের জন্য প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের ৫২ শতাংশ জমি আমি নিজে দান করেছি। ২০১৮ সালে পৌরভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়। সরকারিভাবে ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পৌর ভবনের জন্য আরো প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় করেছি। 

পৌরসভার প্রায় সকল রাস্তায়ই বাতি দেয়া হয়েছে। পৌরসভার অভ্যন্তরীণ সকল রাস্তাঘাটই পাকা করা হয়েছে।  বাউফল পৌরসভার মধ্যে কোন সাঁকো নাই। যতগুলো সাঁকো কিংবা ভাঙা ব্রিজ ছিল তার সব কয়টিই নতুন ব্রিজ করা হয়েছে। পৌরসভায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লাণ্টের আওতায় ১০ কিলোমিটার সুপেয় পানি সরবরাহের লাইনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাসা-বাড়িতে পানির সংযোগ আগামি এক মাসের মধ্যেই দেয়া শুরু করা হবে। 

কিছু রাস্তায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পৌরবাসীসহ যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, এর সংখ্যা খুবই কম। করোনার কারণে আমারা ওই কাজগুলো করতে পারছি না। আশা করি দু’এক মাসের মধ্যেই পৌর শহরের বাকি ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। পৌর শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া কয়েকটি খালের পাড় প্রভাবশালীরা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে। অবৈধ দখলদারদের থেকে ওই খালের পাড় উদ্ধারে কোন পরিকল্পনা রয়েছে কি না জানতে চাইলে মেয়র জুয়েল বলেন, কোনভাবেই অন্যায়ভাবে খালের পাড় দখল করতে দেয়া হবে না। ইতিমধ্যেই আমি খালের পাড়ে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। এজন্য আমাকে মামলায়ও জড়ানো হয়েছে। এখন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সেগুলো উদ্ধার করবো। 

২০২১-২০২২ সালের বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মেয়র বলেন, করোনার কারণে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিতে পারি নাই। তবে বাজেট প্রনয়ণ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। কি পরিমাণ বাজেট হতে পারে ? এমন প্রশ্নে মেয়র বলেন, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৩০ কোটির একটু বেশি ছিল। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ৩৩ কোটি টাকার মতো বাজেট হতে পারে। পৌরবাসীরা এখন কর পরিশোধে আগ্রহী হচ্ছে। আমি বাড়ি বাড়ি ঘুরে কর প্রদানে পৌরবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছি। বর্তমানে কর আদায়ের হার প্রায় ৮০ শতাংশের উপরে রয়েছে।

মেয়র বলেন, পৌরসভার মধ্যে দুস্থভাতা, বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, অস্বচ্ছল ভাতা,প্রতিবন্ধী ভাতা এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনা রোগীদের সহায়তার জন্য মেয়র অক্সিজেন ব্যাংক করে সেখানে আমি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে সহায়তা করছি। ইতিমধ্যেই শেখ কামালের ৭২ তম জন্মদিন উপলক্ষে ১ হাজার ৪০০ লিটারের চারটি অক্সিজেন সিলিন্ডার বাউফল হাসপাতালে দেয়া হয়েছে। আরো চারটি সিলিন্ডার পৌর ভবনে সংরক্ষিত রয়েছে।  বাউফল পৌর শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বাউফল-বগা খালের মদনপুরা অংশে ইকো পার্ক নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে বলে কেই কেউ বলছেন। এ প্রসংঙ্গে  মেয়র বলেন, ইকোপার্ক নার্মে কোন প্রকল্প নাই। খালের এক অংশ ভেঙে যাচ্ছিল, সেখানে গাইডওয়াল দেয়া হয়েছে। কিন্তু গাইডওয়াল রাখা যাচ্ছে না। একারণে হয়তো কেউ মনে করছেন ঠিকাদার ভাল কাজ করেননি। তবে অভিযোগটি সত্য নয়। 

মেয়র জুয়েল জানান, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে লালিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মী। প্রধানমন্ত্রী বাউফল পৌরসভাকে উন্নয়নের জন্য অনেক কিছু দিচ্ছেন। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমি বাউফল পৌরসভাকে মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত করে প্রত্যেকটি মানুষকে আলোকিত করতে চাই। শিশু থেকে বৃদ্ধ, ছাত্র, শিক্ষক, চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী সকলকেই আলোকিত করতে চাই। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে আলোতিক পৌসভার সুফল ভোগ করতে পারে সেদিকেই আমার লক্ষ্য। সর্বক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। পৌরভবনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চাই। পৌরবাসীর মনে স্থায়ী ঠিকানা গড়তে চাই। 


 


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন