করোনা মোকাবেলায় শয্যা বাড়ছে শেবাচিমে


বরিশালে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিনই শনাক্তের তালিকায় যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম। এ অবস্থায় চাপ বেড়েছে হাসপাতালের একমাত্র করোনা ওয়ার্ডটিতে। তবে শয্যা সংকটে রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বেশকিছুদিন ধরেই। মাত্র ১২টি আইসিইউ এবং ১৫০টি সাধারণ শয্যা নিয়ে হিমসিম খাচ্ছিল কর্তৃপক্ষও।
এ অবস্থায় শেবাচিম‘র করোনা ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০টি সাধারণ এবং আরও ১০টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)’র শয্যা বাড়াবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর ফলে করোনা ইউনিটের সাধারণ শয্যার সংখ্যা ২০০ এবং আইসিইউ’র শয্যা এখন ২২ টি উন্নীত হতে যাচ্ছে।
করোনার প্রাদুর্ভাবে রােগীর সংখ্যা হঠাৎই বেড়ে যাওয়ায় নেয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি সব জেলা ও উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে আইসোলেশন ইউনিট (করোনা কর্নার) পুনরায় প্রস্তুতের কাজ চলছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবাগত পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে প্রতিদিনই রোগীর ভিড় বাড়ছে। পাশাপাশি করোনা ওয়ার্ডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শয্যার সংখ্যা মাত্র ১২টি। সবগুলো শয্যা রোগীতে পরিপূর্ণ। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরও ১০টি আইসিইউ শয্যা এবং ওয়ার্ডে আরও ৫০টি সাধারণ শয্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। আশা করি, দ্রুত এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা যাবে।’
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. এস মনিরুজ্জামান জানান, করোনার প্রকোপ দেখা দিলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ হাসপাতালের নতুন বর্ধিত ভবনে করোনা ইউনিট চালু করা হয়। সেখানে প্রাথমিকভাবে ২০ শয্যা করা হয়েছিল। রোগীর চাপ বাড়তে থাকায় প্রথমে ৫০, ১০০ এবং পরবর্তীতে ১৫০ শয্যা করা হয়।
তিনি জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে ক্রমেই রোগীর চাপ বাড়ছে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত করোনা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির সংখ্যা ১৬৩ জন। পাশাপাশি করোনা ওয়ার্ডে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শয্যার সংখ্যা ১২টি। এই ১২টি আইসিইউ শয্যার সবগুলো রোগীতে পরিপূর্ণ। আরও অন্তত ১০ জন রোগীর আইসিইউ সেবা প্রয়োজন।
সহকারী পরিচালক ডা. এস মনিরুজ্জামান আরও জানান, ‘শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল পরিচালক ও সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় করোনা ওয়ার্ডে ১৫০ শয্যা থেকে বাড়িয়ে ২০০ করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি আরও ১০টি আইসিইউ শয্যা পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় ছয় জেলার সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বিশেষ শয্যার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা আইসোলেশন ইউনিট (করোনা কর্নার) পুনরায় প্রস্তত করার কাজ চলছে। বিভাগের ছয় জেলার চিকিৎসকদের নিয়ে কয়েক দফায় ভার্চুয়াল সভা হয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
এমবি
