ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

Motobad news

ভাণ্ডারিয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি, দুই জনের মৃত্যু

ভাণ্ডারিয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি, দুই জনের মৃত্যু
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া রোগির ভিড় বাড়ছেই। রবিবার (২৫এপ্রিল) দুপুর ২টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ৩৫জন। এছাড়া শনিবার (২৪এপ্রিল) ভর্তি হয়েছে ৫০জন। এর মধ্যে ওই দিনই (শনিবার) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভাণ্ডারিয়া পৌর শহরের দক্ষিণ ভাণ্ডারিয়া গ্রামের ফজলুল হকের স্ত্রী মমতাজ(২৮) এবং পার্শ্ববর্তী কাঠালিয়া উপজেলার চেঁচড়ি গ্রামের বাসিন্দা দুলালের ৯ মাসের ছেলে জাহিদ হাসান নামের এক শিশু মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কর্তা (টিএইচএ) ডাঃ ননী গোপাল রায়।  

রবিবার দুপুরে হাসপাতালে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় হাসপাতালের পুরুষ-মহিলা ওয়ার্ডের সকল বেডে রোগি ভর্তি থাকায় বেড না পেয়ে বারান্দার ফ্লোরে ভর্তিকৃত রোগিদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন কর্তব্যরত ডাক্তার ,নার্সরা।

সিনিয়র নার্স ফাহিমা আক্তার জানান, গত ২৪ঘন্টায় ডায়রিয়া রোগি ভর্তির সংখ্যা ৩৫জন, শনিবার ছিল ৫০জন ,গত ৭দিনে ২৪৯জন এবং ৩০দিনে ৪৯০জন। এর মধ্যে শনিবার (২৪এপ্রিল) সর্বোচ্চ ভর্তির সংখ্যা ৫০জন যা গত এক সপ্তাহের মধ্যে তুলনা মূলক বেশি ছিল। তার মধ্যে দুই জন মারা গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কর্তা (টিএইচএ)ডাঃ ননী গোপাল রায় জানান, হঠাৎ ডায়রিয়া প্রকোপ বৃদ্ধির কারন পানি বাহিত। একদিকে বৃষ্টি নাই,অতিরিক্ত খড়া,নদী,খাল ,পুকুরে পানি কম। তা ছাড়া অধিকাংশ নিন্ম আয়ের মানুষ পুকুর,ডোবা ,খাল এবং নদীর  পানিতে রান্না,গোসল,থালাবাসন, কাপড়চোপর পরিস্কার করা এবং স্বাস্থ্য বিধি না মানার কারনে এ রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। 

তিনি আরো জানান, তীব্র গড়মে সংরক্ষণ করে খাবার খাওয়া,বাসি বা সময় উত্তির্ণ খাবার খাওয়ার ফলেও এ রোগ বৃদ্ধি পায়।   যদিও সরকারি ভাবে জানাযায়নি তবে বিভিন্ন অনলাইন,ফেসবুক থেকে জানাগেছে যে আইআরডিসির পরীক্ষায় নদীর পানিতে কলেরার জার্ম পাওয়া গেছে। এমনিতেই ডাক্তারসহ জনবল সংকট তার উপর এই সময় পানি ব্যাবহার এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানলে পরিস্থিতি সামাল দিতে আরো বেশি হিমশিম খেতে হবে।

এদিকে স্থানীয় অনেকে জানান দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদী,খালের পানি ছিল মিঠা। হঠাৎ করে কয়েকদিন যাবত খালের পানি মুখে নিলেই তা লবনাক্ত মনে হয়। অন্যদিকে পৗর সভাসহ উপজেলার বাকি ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে তেলিখালী,নদমুলা, ধাওয়া,ভিটাবাড়িয়া এবং গৌরীপুরের অ-গভীর, গভীর নলুকুপ বসে।
 
উপজেলার বাকি অংশের বাসিন্দাদের নদী, খাল ও পুকুরের পানির উপরে ভরসা করতে হয়। চলমান গ্রীষ্ম মৌসুমে বিভিন্ন জলাশয়ের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ও লবনাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় আরো বিপাকে পড়েছে এ জনপদের বাসিন্দারা। পানি বিশুদ্ধ না করে পান করায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ‘‘রেইন ওয়াটার হার্বেস্টিং সিস্টেম”স্বল্প পরিমানে স্থাপন করা হয়েছে। এ এলাকায় এবছর এখন পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় সেটাও কাজে লাগছে না।  তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপির বিশেষ প্রচেষ্টায় ভাণ্ডারিয়া পৌর শহরে বন্ধুপ্রতীম ভারত সরকারের অর্থায়ণে ১১টি ওয়াটার পিউরিফাই মেশিন স্টেশন স্থাপনের ফলে বেশি আয়ের মানুষরা সেখান থেকে ৫০পয়সা প্রতি লিটার পানি কিনে খাওয়ায় তাদের এ সমস্যায় পড়তে হয়না।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন