ঢাকা শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

Motobad news
শিরোনাম
  • শান্তিরক্ষা মিশন থেকে ফিরবে আরও ১৩১৩ বাংলাদেশি কীভাবে নির্বাচন করবেন, একটা সনদ করেন—রাজনৈতিক নেতাদের ড. ইউনূস উজিরপুর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল গ্রেফতার  উজিরপুরে জেলেকে এক মাসের কারাদণ্ড  বিশেষ মহল আ'লীগকে পুনর্বাসন করে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত: রহমাতুল্লাহ  জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের সূচনা: ড. ইউনূস সংসদ ভবন এলাকায় সংঘর্ষ থেমেছে, অবস্থান নিয়েছে সেনাবাহিনী জুলাই যোদ্ধাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জুলাই সনদে পরিবর্তন আনা হয়েছে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনীতিবিদরা বরিশালে বর্ণাঢ্য আয়োজনে কালবেলা’র তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন
  • স্রোতের বিপরীতে এক আরব নারীর চমক

    স্রোতের বিপরীতে এক আরব নারীর চমক
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    মাঠে আলেকজান্দ্রিয়া ইউনাইটেড ক্লাবের বাস্কেটবল দল। দলের খেলোয়াড়ের মধ্যে কালো হিজাব মাথায় দাঁড়িয়ে আছেন এক নারী। নাম সারাহ গামাল। তবে এই নারী আচমকা খেলার কোর্টে ঢুকে পড়েছেন—বিষয়টি এমন নয়। মিসরের বাস্কেটবলে নামকরা এই ক্লাবের খেলা তিনি পরিচালনা করছিলেন। তিনি একজন রেফারি।
     
    আসন্ন অলিম্পিকের আসরে আরব ও আফ্রিকান নারী হিসেবে প্রথমবারের মতো রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন সারাহ। ৩২ বছর বয়সী সারাহ বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘রেফারি হিসেবে আমার যাত্রা শুরুর পর থেকে এখনো কোনো নেতিবাচক শব্দ শুনিনি। অথবা কোনো ধরনের বাধার মুখোমুখি হইনি। হিজাব আমার কাছে খুবই স্বাভাবিক পোশাক। এর কারণে কোনো সমস্যায়ও পড়িনি।’

    আমি পুরুষদের অনেক খেলা পরিচালনা করেছি। এর মধ্য দিয়ে আমি নিজের অভিজ্ঞতার ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছি; যা মিসরের রেফারিং কমিটির আস্থা জুগিয়েছে।’

    আন্তর্জাতিক বাস্কেটবল ফেডারেশন ২০১৭ সাল থেকে তাদের নিয়মে পরিবর্তন করে বিশেষ পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়দের জন্য হিজাব পরার অনুমতি দিয়েছে।

    সারাহর নারী রেফারি হিসেবে খেলা পরিচালনা ও খেলোয়াড়দের অনুপ্রেরণা জোগানোর বেশ অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ২০১৮ সালে বেলারুশে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বাস্কেটবল ফেডারেশন ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ কাপ ও ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকান উইমেন্স চ্যাম্পিয়ন্সশিপ প্রতিযোগিতায় ম্যাচ পরিচালনার অভিজ্ঞতা।

    সেসব অভিজ্ঞতা নিয়ে সারাহ বলেন, ‘হিজাব কখনোই ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেনি। আশা করি, টোকিও অলিম্পিকেও কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না। গুরুত্বপূর্ণ এই আসরে দায়িত্ব পালনের জন্য এখন আমার পুরোপুরি মনোযোগ অনুশীলনে ও যথার্থ প্রস্তুতিতে।’

    খেলার দুনিয়ায় যেখানে পুরুষদের প্রাধান্য বেশি, সেখানে একজন নারী হিসেবে পুরুষদের খেলা পরিচালনায় কোনো দ্বিধা সারাহর মধ্যে কাজ করেনি। তিনি বলেন, ‘আমি পুরুষদের অনেক খেলা পরিচালনা করেছি। এর মধ্য দিয়ে আমি নিজের অভিজ্ঞতার ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছি; যা মিসরের রেফারিং কমিটির আস্থা জুগিয়েছে।’

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সারাহ পাঁচ বছর বয়সে এই খেলার প্রেমে পড়েন। আর হাতেখড়ি হয় বড় বোনের কাছে। এএফপিকে তিনি বলেন, ‘যখন আমার মধ্যে এ খেলা নিয়ে আগ্রহ জন্মে, তখন আমার বয়স পাঁচ বছর। আর এই আগ্রহ থেকে আমি আমার নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি। পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণের জন্য আলাদা সময় বের করে নিতাম। এর জন্য সব ধন্যবাদ আমার মায়ের প্রাপ্য। তাঁর কারণেই আমি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছি ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পেরেছি। এটা খুব কঠিন ছিল। কারণ, এই বিষয়ে পড়তে গিয়ে প্রচুর পড়াশোনার চাপ ছিল। এমনকি মানসিক চাপও ছিল।’

    অলিম্পকের আসরে নিজের দক্ষতা দেখাতে উন্মুখ হয়ে আছেন সারাহ। তিনি বলেন, ‘এত বড় আসরে আমাকে নির্বাচিত করার খবরে পুরো পরিবার এখনো আনন্দে আত্মহারা। এত বছরের আমার সব ঘাম ও চোখের পানির পুরস্কার এটি। আর আমার পরিবার আমাকে সমর্থন না দিলে এটি কখনো সম্ভব হতো না।’

    সারাহ বলেন, ‘প্রথম আরব ও আফ্রিকান নারী হিসেবে অলিম্পিকে রেফারিং করার সুযোগ খুবই ইতিবাচক। আমার ওপর কোনো চাপ নেই। এখানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’ 

    করোনা মহামারির মধ্যে দেশের বাইরে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার একটু উদ্বিগ্ন...কিন্তু এর কারণে আমাকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে তাদের উৎসাহে ঘাটতি পড়েনি। আমি ভবিষ্যতে পুরুষ ও নারীদের ওয়ার্ল্ড কাপেও রেফারিং করতে চাই এবং আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে আমার প্রতি যে আস্থা রাখা হয়েছে, তা ধরে রাখতে চাই।’


    /ইই
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ