ভোলার ঈদ বাজার: দাম বেশি, ভিড়ও বেশি
.jpeg)

প্রচণ্ড গরম আর তীব্র তাপ উপেক্ষা করে ভোলার ঈদ মার্কেটগুলোতে ভিড় বেড়েছে কয়েকগুণ। দীর্ঘ সময় কাটিয়ে বিপণি বিতানগুলো থেকে পছন্দের পণ্যটি কিনে বাড়ি ফিরছেন ঈদবাজারে আসা ক্রেতারা।
ক্রেতাদের অভিযোগ, এবার ঈদের পোশাকে গলাকাটা দাম নিচ্ছেন দোকানিরা। বিশেষ করে রেডিমেড পোশাকের দাম বেশি। বিপণি বিতানগুলো একদরের নামে গলাকাটা দাম রাখছেন।
ভোলার বোরহানউদ্দিনের উপশহর কুঞ্জেরহাটের মায়ের দোয়া গার্মেন্টসে পাঞ্জাবি কিনতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রেতা বলেন, ‘একটি ভালো ব্রান্ডের পাঞ্জাবি দেখাতে বললে ১৭৫০ টাকা স্টিকারের একটি পাঞ্জাবি দেখিয়ে দাম চায় ২২০০ টাকা। গায়ের স্টিকারের চেয়েও বেশি দাম চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে দোকানদার জানায় স্টিকারে ইন্ডিয়ান রেট দেওয়া তাই গায়ের মূল্য দেখে লাভ নেই।
ওই বাজারে আসা আরেকজন বলেন, ‘রোজার এক মাস আগে যে শার্ট ১২শ টাকায় বিক্রি হয়েছে এখন তা ১,৪৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাবরিনা নামের এক গৃহিনী বলেন, ‘সাধারণ একটি থ্রি-পিস যা আগে এক হাজার টাকায় বিক্রি করা হতো। ঈদ মার্কেটে সেটা বিক্রি করা হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকায়।’
সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য জেলাগুলোর দোকানে ক্রয়মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামে পোশাক বিক্রি করার অভিযোগে অভিজাত শপিংমলে অভিযান চালানো হলেও ভোলার প্রশাসনের চোখে পড়ছে না এসব কিছুই।
অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের হাত থেকে বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের দাবি জানান তারা।
উপজেলার বুনন ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী প্রভাষক মোঃ হাসনাইন জানান, অন্য বছরের তুলনায় এবার সব পোষাকের ক্রয়মূল্যই অনেক বেশি। কিন্তু তাই বলে অধিক লাভের জন্য মনগড়া দাম চাওয়া ও নেওয়া ঠিক নয়। তবে কিছু কিছু ক্রেতা এমনও হয় পোশাক দেখতে দেখতে দোকানীদের এক-দেড় ঘন্টা সময় নষ্ট করে শেষে কিছুই নেয় না! এটাও কিন্তু ঠিক নয়।
উপশহর কুঞ্জেরহার ‘নিডেল আই জেন্টস’ এর স্বত্বাধিকারী শাহাবুদ্দিন মুন্সি জানান, আমি ১হাজার টাকার পোশাক সর্বোচ্চ দাম চাই ১৪’শ টাকা। পর্যায়ক্রমে এরকম সব মালে কাস্টমারকে হয়রানি মুক্ত রাখি। দেখা গেছে অনেক দোকান ঘুরে এসে আবার সেই মাল নেয়। কাস্টমারের সাথে অন্যান্য দোকানের এরকম উল্টাপাল্টা দর-কষাকষির প্রভাব আমাদের উপর ও পরে ফলে আমরা ও বিব্রত।
তবে জেলা ও উপজেলা শহরের বিভিন্ন এলাকার মার্কেটে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পোশাকেই বেশি জমজমাট দেখা গেছে। বিপণি বিতানগুলোতে বাহারি নাম আর ডিজাইনে মেয়েদের পোশাকই উজ্জ্বলতা বাড়িয়েছে ঈদ বাজারের।
এছাড়া ইন্ডিয়ান টিস্যু কাপড়ের নানা আইটেমের পোশাকও নজর কাড়ছে এদেশের নারীদের। তবে শাড়িরও চাহিদা রয়েছে এক শ্রেণীর নারীদের কাছে।
এছাড়া বরাবরের মতো ছেলেরা শার্ট-প্যান্টের পাশাপাশি কিনছেন পাঞ্জাবি। শিশুদের জন্য রয়েছে রং বাহারি নকশাদার পোশাক। তবে গরমের কারণে এসব পোশাকের মধ্যে সুতি পোশাকের চাহিদা বেশি।
বিভিন্ন শপিংমলের স্বত্বাধিকারীরা বলেন, ‘এবার ঢাকা থেকে বেশি দাম দিয়ে থ্রি-পিস কিনতে হয়েছে। বিশেষ করে হাতের কাজ করা থ্রি-পিসের বেশ দাম দিতে হয়েছে।’
এদিকে, সারা বছর যেমন-তেমন হলেও উৎসব আয়োজনে শাড়ি পরার আগ্রহ থাকে কমবেশি সবার। ঈদ বাজার ঘুরে জানা যায়, বিদেশি শাড়ির তুলনায় দেশি শাড়ির চাহিদা সব থেকে বেশি। এবারের ঈদে বেনারসির কিছু নতুন কালেকশন এসেছে। রঙের ক্ষেত্রে হালকা রঙকেই প্রাধান্য দিয়েছেন ফ্যাশন ডিজাইনাররা। দেড় হাজার থেকে শুরু করে ১৫-২০ হাজার টাকা দামেরও শাড়ি রয়েছে এসব ফ্যাশন হাউজগুলোতে। ক্রেতারা দাম এবং মান ভেদে এসব শাড়ি কিনছেন।
মার্কেটে শাড়ি কিনতে আসা বেশ কয়েকজন নারী ক্রেতার সাথে আলাপকালে তারা জানান, শাড়ির রং হিসেবে হালকা ও উজ্জ্বল রঙের শাড়িই তাদের প্রথম পছন্দ। তবে ভারি কাজ করা শাড়িও খুঁজছেন তারা।
এসএম
