মনপুরায় জোয়ারে ২ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ী বাঁধের ক্ষতি


ভোলার মনপুরায় নিন্মচাপ, ঝড়ো বাতাসে মেঘনার পানি বিপৎসীমার ওপর প্রবাহিত হয়ে মূল ভূখন্ডের ভিতরে ও বাহিরে জোয়ারে প্লাবিত হয়। এতে করে জোয়ারের পানির চাপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ী বাঁধের। উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের ২ কিলোমিটারের বেশি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ী বাঁধের ক্ষতি হয়ছে বলে নিশ্চিত করে হাজিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন হাওলাদার।
এদিকে সোমবার উপজেলার হাজিরহাট, ১ নং মনপুরা ও উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ১০ গ্রামে বেড়ীর ভিতরে ও বাহিরে জোয়ারের পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। তবে গত ৬ দিন ধরে এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে উপজেলার ১০ গ্রামের ২০ হাজার বাসিন্দা। এদিকে দূর্গত এলাকায় সরকারিভাবে এখন ত্রান কার্যক্রম শুরু না করায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে উপকূল জুড়ে।
এদিকে সোমবার দুপুর ৩ টায় মেঘনার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ডিভিশন-২ এর উপসহকারি প্রকৌশলী আবদুর রহমান।
তিনি আরও জানান, জোয়ারের পানির চাপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ী বাঁধের। জোয়ারের পানি কমে গেলেই ক্ষতিগ্রস্থ বেড়ী বাঁধের সংস্কার করতে জরুরী ভিত্তিতে কাজ শুরু করবে পাউবো।
এদিকে ৬ দিন ধরে পানিবন্দি থাকার পরও ত্রান না পেয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন দাসেরহাট গ্রামের কুলসুম, রহিমা, শাহাজাহন, বাছেদ, জয়দেব, রাণী দাস। তারা জানান, ৬ দিন ধরে পানিবন্দি থাকার পরও সরকারিভাবে ত্রান পায়নি। কেউ খোঁজ-খবর নেয়নি। তবে পানির কষ্টে অনুভব করেছেন তারা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ১নং মনপুরা ইউনিয়নের পূর্ব আন্দিরপাড়, পশ্চিম আন্দিরপাড়, কাউয়ারটেক, ঈশ্বরগঞ্জ, কূলাগাজী তালুক গ্রাম ও হাজিরহাট ইউনিয়নের দাসেরহাট, সোনারচর, চরযতিন, চরজ্ঞান গ্রাম ও উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের আলমনগর ও মাষ্টারহাট এলাকার বেড়ীর বাহিরে ও ভিতরে ২-৩ ফুট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে।
এছাড়াও হাজিরহাট ইউনিয়নের পূর্ব-পশ্চিম দুইপাশের বন্যা নিয়ন্ত্রন বেড়ী বাঁধের দুই কিলোমিটার ক্ষতি হয়। এছাড়াও মনপুরা ও উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের বেড়ী বাঁধের ক্ষতি হয়েছে বলে জানান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমানত উল্লা আলমগীর ও মোঃ জাকির হোসেন মিয়া।
এই ব্যাপারে হাজিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন হাওলাদার জানান, গত ৬ দিনের জোয়ারের পানির চাপে ২ কিলোমিটারের বেশি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ী বাঁধের ক্ষতি হয়। এছাড়াও কৃষি জমির ফসল ও বাড়ি-ঘরের ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন ও ১ নংমনপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমানত উল্লা আলমগীর জানান, তাদের ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্র বেড়ী বাঁধের ক্ষতি হয়।
এই ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডিভিশন-২ এর উপসহকারি প্রকৌশলী আবদুর রহমান জানান, জোয়ারের পানির চাপে ২ কিলোমিটার বেড়ী বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। দ্রুত বেড়ী বাঁধ সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে জোয়ারের পানি কমতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি।
এই ব্যাপারে মনপুরা উপজেলার নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা চরফ্যাসন উপজেলার নির্বাহী অফিসার আল-নোমান জানান, পাউবোকে ক্ষতিগ্রস্থ বেড়ী বাঁধের সংস্কারের জন্য বলা হয়েছে। জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারিভাবে সাহায্য আসলে দেওয়া হবে।
এইচকেআর
