ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা পরে বরিশাল থেকে ছাড়ছে যাত্রীবাহী লঞ্চ

সরকারি নির্দেশনার ২৪ ঘণ্টা পরে বরিশাল থেকে ছাড়ছে যাত্রীবাহী লঞ্চ। নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে রোববার রাত ৮টা কল-কারখানার শ্রমিকদের নিয়ে ঢাকায় যাত্রা করবে লঞ্চগুলো। তবে এ দিনে ঢাকা থেকে কোন লঞ্চ বরিশালে আসবে না বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
অবশ্য কতটা লঞ্চ বরিশাল থেকে ছেড়ে যাবে সে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলতে পারেনি তারা। যাত্রীদের উপস্থিতির ওপর লঞ্চ বাড়বে না কমবে তা নির্ভর করছে বলে জানিয়েছে লঞ্চ মালিক এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, পহেলা আগস্ট থেকে গার্মেন্টস্ সহ সকল ধরনের কল-কারখানা খুলে দিয়েছে সরকার। এমন খবরে শনিবার সকাল থেকে বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক-মহাসড়কে ঢাকামুখী শ্রমিকদের ঢল নামে। চাকরি বাঁচাতে তারা যে যার মতো করে পণ্যবাহী পরিবহন, থ্রি-হুইলার এবং মোটরসাইকেলে কেউ বা আবার পায়ে হেঁটেই ঢাকায় যাত্রা শুরু করেন।
শ্রমিকদের এমন দুর্ভোগ লাঘবে শনিবার বিকাল থেকে রোববার বেলা ১২টা পর্যন্ত বাস এবং লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেয় সড়ক এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। খবর পেয়ে শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই বরিশাল-মাওয়া রুটে শুরু হয় বাস চলাচল। যা রোববার বেলা ১টা পর্যন্ত স্বাভাবিক ছিলো। তবে যাত্রী সংকট এবং লঞ্চ কর্মকর্তা ও শ্রমিক না থাকার অজুহাতে বন্ধ রাখা হয় বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটের বিলাসবহুল লঞ্চগুলো। তাই শনিবার রাতে বরিশাল নদী বন্দর থেকে ফিরে গেছেন অসংখ্য যাত্রী।
সরেজমিনে বরিশাল নদী বন্দরে দেখা যায়, রোববার সকাল থেকেই ঢাকামুখী যাত্রীদের ঢল নামতে শুরু করে বরিশাল নদী বন্দরে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে নদী বন্দরের পন্টুন শ্রমিকে পূর্ণ হয়ে যায়। তবে যাত্রী বাড়লেও বরিশাল থেকে কোন লঞ্চ ছাড়বে না বলে জানিয়ে দেন লঞ্চ মালিকরা। তবে যাত্রীপরিবহনের অমুনতি পেয়ে সকালে অভ্যন্তরীণ রুটের বেশ কয়েকটি ছোট লঞ্চ ছেড়ে যায় নিজ নিজ গন্তব্যে। একইভাবে ভোলা, মেহেন্দিগঞ্জ, ঝালকাঠি, কাঠালিয়াসহ অভ্যন্তরীণ অন্যান্য রুট থেকে ছেড়ে আসে বেশ কিছু একতলা লঞ্চ।
এদিকে, ঢাকার লঞ্চ বন্ধ থাকার খবরে শ্রমিকদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে নদী বন্দরে বিক্ষোভও করেন তারা। পরবর্তীতে দুপুর ১টার দিকে বরিশাল থেকে লঞ্চ ছাড়ার ঘোষণা দেন মালিকরা। ঘোষণার পর পরই বরিশাল নদী বন্দরে নোঙর করা এমভি এ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চে প্রথম এবং দ্বিতীয় তলার ডেক শ্রেণি যাত্রীতে পূর্ণ হয়ে যায়। পাশাপাশি লঞ্চের কেবিনের জন্যও হুমড়ি খেয়ে পড়েন যাত্রীরা।
বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বেলা ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচলের কথা ছিলো। কিন্তু গার্মেন্টস্ শ্রমিকদের দুর্ভোগের বিষয়টি নিয়ে সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রোববার রাত থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বরিশাল নদী বন্দরে ৮টি লঞ্চ নোঙর করা আছে। আমি এ্যাডভেঞ্চার লঞ্চ মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি দুর্ভোগে পড়া যাত্রীদের ঢাকায় পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ভাড়াই নিবেন তারা। কুয়াকাটা-২ লঞ্চটিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাত্রীদের ভিড় বেশি হলে সেটিও শ্রমিকদের নিয়ে ঢাকায় যাত্রা করবে। সব লঞ্চ রাত ৮টার পরে ছেড়ে যাবে। তবে কোন লঞ্চেই ধারণ ক্ষমতার বেশী যাত্রী পরিবহন করতে দেয়া হবে না বলে জানান বন্দর কর্মকর্তা।
এমবি