ঢাকা শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Motobad news

বাজারে সব পণ্যের বাড়তি দাম, জনজীবনে নাভিশ্বাস

বাজারে সব পণ্যের বাড়তি দাম, জনজীবনে নাভিশ্বাস
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরিশালের বাজারে দরকারি প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। বিগত সপ্তাহের তুলনায় পণ্যের দাম বেড়েছে নতুন করে। পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত আছে প্রায় দেড়মাস যাবত। যদিও বাজারে প্রায় সকল পণ্যেরই পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। আর এর কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা করোনাকালীন সময়, বৃষ্টিপাত, উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতিসহ নানা অজুহাত তুলে ধরছেন। তবে তাদের এসব দাবি মানতে নারাজ ক্রেতারা। ঠুনকো অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম ক্রমান্বয়ে বাড়াচ্ছেন বলে মনে করছেন তারা। শুক্রবার বরিশাল মহানগরীর বেশকিছু বাজারে অকারণে মূল্যবৃদ্ধির এমন চিত্র দেখা গেছে।

দম বাড়ার প্রথম তালিকাতেই আছে চাল। বেড়েছে আটা-ময়দার দামও। দাম বাড়ার প্রবণতা থেকে বাদ পড়েনি চিনিও। ডালের দামও বাড়তি। এছাড়া দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ডিম ও মুরগি। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় এসব পণ্যের দাম এ সপ্তাহে আরও একধাপ বেড়েছে। অপরদিকে সবজি, মাছ, আলু, পেঁয়াজ ও ভোজ্যতেলের দামও বাড়তি। নাগালের বাইরে রয়েছে মাংসের দাম। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ও সীমিত আয়ের মানুষ।

বাংলাবাজারের ক্রেতা সরোয়ার হোসেন বলেন, বাজারে জিনিসপত্রের অভাব নেই। কিন্তু দাম চড়া। যেসব পণ্য বেশি দরকারি, সেসব পণ্যের দামই বেড়েছে। তবে খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। স্কুল-কলেজও খুলে দেওয়ার কথা হচ্ছে। এ কারণে নগরীতে মানুষ বাড়ছে। ফলে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পণ্যের দামও বেড়ে যাচ্ছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের চালের দামই বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মোটা চালের (স্বর্ণা, চায়না) দামও এখন ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা কেজি। আর মাঝারি ধরনের পাইজাম ও লতা চালের দাম এখন ৫৮ টাকা কেজি। 
চালের খুচরা বাজারে মিনিকেট ৬০ থেকে ৬২, আটাশ ৫০ থেকে ৫৪, স্বর্ণা ৪৬ থেকে ৪৮ ও নাজিরশাইল ৬৪ টাকা থেকে ৬৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। 

দাম বেড়েছে চিনিরও। ৬০ টাকার কেজি চিনি এখন ৮০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। মসুর ডালের (বড় দানা) দাম ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি, ছোট দানার দাম ৯৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা। 
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকার মধ্যে। আর ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত। 

বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা থেকে ৫২ টাকা কেজিতে। গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম ছিল একই। এদিকে কাঁচা মরিচ প্রতিকেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। যদিও অলিগলির দোকানগুলোতে প্রকারভেদে পণ্যের দামে পার্থক্য রয়েছে।

এদিকে শীতের আগাম সবজি শিম ও ফুলকপি বাজারে আসতে শুরু করেছে। তবে দাম চড়া। শিম কিনতে কেজিতে ১৬০-২০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। আর ছোট একটা ফুলকপি কিনতে লাগছে ৩০-৫০ টাকা। টমেটো ও গাজর কিনতে কেজিতে ১০০ টাকার ওপরে গুনতে হচ্ছে। ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটল ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা, কাঁচকলার হালি ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ঢেঁড়সের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে, বরবটির কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। তবে ছোট এক আঁটি লালশাকের জন্য ক্রেতাকে ২০ থেকে ৩০ টাকা গুনতে হচ্ছে। মুলাশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা আঁটি, আর কলমি শাক ৫ থেকে ১০ টাকা আঁটি।

বাজারে রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৮০ টাকা, মৃগেল মাছের কেজি ২৪০ থেকে ২৮০ টাক, তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, পাবদা ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা আর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে। বাজারে ছোট-বড় সব ধরনের ইলিশেরও দেখা মিলছে। তবে দাম এখনও সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। বড় (এক কেজির বেশি) ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা, মাঝারি আকারের ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা আর ছোট আকারের ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
 


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন