ভাণ্ডারিয়ায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি


ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা (হাসপাতালে) কেন্দ্রে পানি বাহিত রোগ ডায়েরিয়ার প্রকোপ আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালের বারান্দায়ও রোগিদের চিকিৎসা সেবা নিতে দেখা গেছে।
রবিবার (১৮এপ্রিল) দুপুর থেকে গত এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে সরেজমিনে এ চিত্র দেখা গেছে। তবে হাসপাতালের ডাক্তার,নার্স এ উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে সেবা নিতে আসা রোগীদের সেবা প্রদানে দেখা গেছে।
বর্তমানে বৈশ্বিক উচ্চ পর্যায়ের করোনা ভাইরাস সংক্রামন মহামারি আকার ধারন করার উপর আবার পানি বাহিত রোগ ডায়েরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধিতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে কর্তব্যরত ডাক্তার ,নার্স। আর এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু এবং বৃদ্ধ।
এ হাসপাতালটি ৩১সয্যা থেকে ৫০সয্যা এবং ৫০সয্যার পর ১০০সয্যায় উন্নিত হওয়ায় ভবন নির্মানের কার্যক্রম চলমান থাকলেও ডাক্তার,নার্স এবং জনবল চলছে ৩১সয্যার হাসপাতালের নিয়মে। সেখানেও ৮জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও আছে ৫জন।
নার্সের ঘাটতি না থাকলেও তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির জনবল সংকট রয়েছে। এদিকে হাসপাতালে শিশু,গায়নি,হার্ড,ডেন্টাল বিষয়ে এক এক জন করে কনসালটেন্ট থাকার কথা থাকলেও তা নেই। জনবল সংকটের কারনে অনেক সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতায়ও ব্যাঘাত ঘটে।
এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে তার দলের লোক ছাড়াও অন্যান্য দলের নের্তৃবর্গ, প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন ছাড়াও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সার্বক্ষণীক খোঁজ খবর রাখছেন।
তা ছাড়া তিনি ব্যাক্তিগত ভাবে ডাক্তার,নার্স সহ হাসপাতালে কর্তব্যরত সকলের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং বিভিন্ন স্থান থেকে আগত রোগিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য হাসপাতালের বেডকভার, বালিসের কভার,স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করে যাচ্ছেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য প.প.কর্মকর্তা (টি.এইচ.এ)ডাঃ ননী গোপাল রায়। তিনি জানান, করোনার ঝুঁকি থেকে সুরক্ষার জন্য ১০বেডের একটি আইসিউ সেন্টার স্থাপনের জন্য ইতো মধ্যে তার বিশেষ তৎপরতায় এবং বিশেষ ব্যাবস্থায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ৫টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটরও এ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
যাতে সেবা নিতে আসা গ্রামঞ্চলের সাধারন মানুষ অধিক অর্থ ব্যায়ে খুলনা বা বরিশাল যেতে না হয়। এর পূর্বে তিনি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে যক্ষ্মা ও করোনা পরীক্ষার জন্য জিনএক্সপার্ট মেশিনও পাঠিয়েছেন। টিএইএ আসা প্রকাশ করেন অতিদ্রত এই জনবল সংকট এড়ানোর জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ নজর দেবেন। কারন এই হাসপাতালটি পার্শ্ববর্তী ৪/৫টি উপজেলার সংযোগস্থানে।
অন্যদিকে করোনা সংক্রামন থেকে সুস্থ্য এবং সুরক্ষায় থাকার মাস্ক ব্যাবহার সহ স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সরকার সারাদেশে গেল ১৪এপ্রিল থেক আট দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে।
তা বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে সেখানে এ কয়েক দিনে হাসপাতালে বিভিন্ন ওষধ কোম্পানীর অধিক রিপ্রেজেন্টিভদের উপস্থিতিতে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ার আর এক ভিন্ন চিত্রও দেখা গেছে।
দেখা গেছে একটি গুরুর অবস্থার শিশু রোগীকে কি ওষধ ডাক্তার লিখেছে তা দেখার জন্য বাচ পাখির মত ছোবল দিয়ে ওই রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে মোবাইলে স্ক্রিনসট দেয়া আবার কেউ দেখেন তার কোম্পানির প্রডাক্ট লিখেছেন কিনা। এসময় হাসপাতালের কর্তব্যরক অনেকে জানান,এদের উৎপাতে তাদের কাজের ব্যাঘাত ঘটে।
ডায়েরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি এবং রিপ্রেজেন্টিভদের নির্ধারিত সময়ের পরে দিনে রাতে উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য প.প.কর্মকর্তা (টি.এইচ.এ)ডাঃ ননী গোপাল রায় জানান, প্রতিবছরই এই সিজনে এ রোগের বৃদ্ধি পায় । এ হাসপাতালে গত সাত দিনে গড়ে ৩০জন করে রোগি ভর্তি হচ্ছে । তাদের মধ্যে অনেকে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। আর রিপ্রেজেন্টিভদের বিষয়ে আমরা যতদুর পারি চেষ্টা করি মানানোর। তার পরেও বিষয়টি দেখবেন বলেও জানান তিনি।
ভাণ্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মো. নাজমুল আলম জানান, টি.এইচ.এর সাথে কথা বলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
একই বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের পিরোজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মো. জাকি এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা উপজেলা পর্যায়ে টি.এইচ.এ ই ব্যাবস্থা নিতে পারেন। সে জন্য এতদুর পর্যন্ত আসতে হয়না।
এইচকেআর
