ঢাকা সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

Motobad news

বাউফলে কেন্দ্র ফির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

বাউফলে কেন্দ্র ফির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

কক্ষ পরিদর্শক শিক্ষকদের কোনো প্রকার আপ্যায়ন করানো হয়নি। অথচ আপ্যায়ন বিল দেখানো হয়েছে ৬০ হাজার ৬১৫ টাকা। আবার কেন্দ্র ও ভেন্যু কেন্দ্রের মধ্যে দূরত্ব মাত্র আড়াইশ মিটার। দুই কেন্দ্রে আসা-যাওয়ার রিকশাভাড়া ৩০ টাকা। অথচ ২৪ শিফটের পরীক্ষায় আভ্যন্তরীণ যাতায়াত বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ১৬ হাজার ৫৪০ টাকা। এছাড়াও নানা অসঙ্গতিপূর্ণ ভাউচার দেখিয়ে কক্ষ পরিদর্শক শিক্ষকদের মাত্র ১৩৭ টাকা সম্মানি ভাতা দেখিয়ে কেন্দ্র ফি’র টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

এমন ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাউফল সরকারি কলেজ কেন্দ্রের সম্প্রতি শেষ হওয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা (এইচএসসি) পরীক্ষার বেলায়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা সঠিকভাবে কেন্দ্র ফি খরচ ও সম্মানি ভাতা বন্টণের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।  বাউফল সরকারি কলেজ সূত্রে জানা গেছে,২০২১ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা গত ২ ডিসেম্বর পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শেষ হয়েছে ৩০ ডিসেম্বর।

২৪ শিফটের পরীক্ষায় ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা ডিগ্রী কলেজ, কালাইয়া ইদ্রিস মোল্লা ডিগ্রী কলেজ ও বাউফল সরকারি কলেজের ১ হাজার ২৩৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ২৭০ টাকা করে কেন্দ্র ফি বাবদ ৩ লাখ ৩২ হাজার ৯১০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই বরাদ্দ থেকে ১৩৭ টাকা করে কক্ষ পরিদর্শক বাবদ ৬৬ হাজার ৫৪২ টাকা ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ৭০ টাকা করে ৯ হাজার ১০০ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। বাকি টাকার সিংহভাগ ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।  

পরীক্ষা কমিটির এক সদস্য বলেন,‘ফটোকপি বাবদ দেখানো হয়েছে ২০ হাজার ৪৯০ টাকা। সব মিলিয়ে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার বেশি ফটোকপি করা হয়নি। আর অভ্যন্তরীণ যাতায়াত দেখানো হয়েছে ১৬ হাজার ৫৪০ টাকা। সেখানে সব মিলিয়ে সাড়ে তিন হাজার টাকার বেশি ব্যয় হয়নি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কক্ষ পরিদর্শক বলেন,‘তিনি পরীক্ষার সময় চা পান করতে চেয়েছিলেন। তাঁকে কোনো চা পানের ব্যবস্থা করা হয়নি। অথচ আপ্যায়ন বিল বাবদ দেখানো হয়েছে  ৬০ হাজার ৬১৫ টাকা।’আরও ১০ জন কক্ষ পরিদর্শক অভিন্নভাবে বলেন,তাঁদেরকে কোনো আপ্যায়ন করানো হয়নি। তাঁদেরকে ১৩৭ টাকা সম্মানি ভাতা দিয়ে অসম্মান করা হয়েছে।

এ কারণে তাঁরা ওই টাকা গ্রহণ করেননি। আরেক কক্ষ পরিদর্শক বলেন,‘বাউফল সরকারি কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা ডিগ্রী কলেজের মধ্যে দূরত্ব মাত্র আড়াইশ মিটার। যেখানে আসা-যাওয়া করতে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা ব্যয় হতে পারে। অথচ ২৪ শিফটের পরীক্ষায় যাতায়াত বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ১৬ হাজার ৫৪০ টাকা। এটা লুটপাট ছাড়া কিছুই না।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,কালিশুরী ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে মোট ২৫৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। ওই কেন্দ্রে কক্ষ পরিদর্শকদের দুপরে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং প্রত্যেককে দুইশ টাকা করে সম্মানি দেওয়া হয়েছে।

বাউফল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অধ্যাপক আবুল বশার তালুকদার বলেন,‘সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী কেন্দ্র ফির টাকা ব্যয় করা হয়েছে। আপ্যায়ন বাবদ খরচের বিষয়ে বলেন,‘শিক্ষকদের নিয়ে মতবিনিময় করেছেন এবং তাঁদেরকে দুপুরে খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।’ তাহলে কক্ষ পরিদর্শক শিক্ষকদের চা পানের ব্যবস্থা করা হয়নি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাহলেতো ব্যয় আরও বেড়ে যেত। আরও বেশি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হতো। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল আমিন শিক্ষকদের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,‘সুষ্ঠুভাবে অভিযোগের নিস্পত্তি করা হবে।’

 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন