নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত চরাঞ্চলবাসী


পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন নদীবেষ্টিত দ্বীপ চরাঞ্চলে সব ধরনের নাগরিক সুবিধা এখনো পৌঁছায়নি। চারদিকে নদী হওয়ায় এ উপজেলার উল্লেখযোগ্য বড় তিনটি চরে যেতে নদীপথ ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। বিশ হাজারের অধিক মানুষের বসবাস উপজেলার চরবোরহান, চরশাহজালাল ও চরহাদিতে পৌঁছায়নি জনগণের চাহিদা অনুযায়ী সব সুবিধা।
প্রতিনিয়ত জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয় এ চরবাসীকে। রাস্তাঘাটেরও নেই তেমন উন্নতি। আবার প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য পরিমাণ পাকা রাস্তা থাকলে নেই সেতু। হাতেগোনা কয়েকটি ছোট বাহন থাকলেও সেতুর অভাবে তা চলতে হয় গণ্ডির ভেতর। সম্প্রতি বিদ্যুৎ পৌঁছালেও বাড়েনি চরবাসীর জীবন উন্নয়নের মান আর সচেতনতা। বাল্যবিয়ের প্রবনতা কয়েকগুণ বেশি।
পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন এখানকার শিশুরা। হাতেগোনা কয়েকটি বিদ্যালয় থাকলেও শিক্ষকরা নিয়মিত করাচ্ছেন না পাঠদান। অভিভাবকরাও সন্তানদের পড়াশুনা করাতে বিমুখ। বঞ্চিত হচ্ছেন চিকিৎসাসেবা থেকেও। অসুস্থ্যদের দীর্ঘ নদী পাড়ি দিয়ে উপজেলা সদরে নিতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে মৃত্যুর ঘটনা। অন্যদিকে সীমানা বিরোধ নিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলার চরগুলোর বাসিন্দাদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা প্রায় নিত্যদিনের।
চরহাদির রাকিবুল নামে এক যুবক জানান, চরবাসী তাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য তেমন গুরুত্ব দেন না। ছেলে একটু বড় হলে জেলে পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত করেন। চরহাদিসহ চরবোরহান ও চরশাহজালালে নেই চিকিৎসাসেবা। রাস্তাঘাট। এখানে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি পানি হলেই চরগুলো তলিয়ে যায়। অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের ১৮ বছরের আগেই বিয়ে দিয়ে দেন।
চরবোরহান ইউপি চেয়ারম্যান নজির সরদার জানান, চলাঞ্চলে বাল্যবিয়ের হার সবচেয়ে বেশি। শিক্ষার হার ১০ ভাগেরও কম। এখানের মানুষ সন্তানদের পড়াশুনা করাতে চান না। চিকিৎসার নেই কোনো ব্যবস্থা। নদীর পানি একটু বৃদ্ধি পেলেই তলিয়ে যায় চরবোরহান ও চরশাহজালাল।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল কাইয়ূম বলেন, চরাঞ্চলবাসীর জীবনমান উন্নয়নে প্রশাসন কাজ করছে। বাল্যবিয়ে রোধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। চর হওয়ায় মানুষ কিছুটা নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এইচকেআর
