ঢাকা সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

Motobad news
এক মাসেই আক্রান্ত ১৯ হাজার, মৃত্যু ২০১

বরিশালে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর ১৩ মাসের রেকর্ড ভাঙলো জুলাই মাস

বরিশালে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর ১৩ মাসের রেকর্ড ভাঙলো জুলাই মাস
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

করোনা ভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল হয়ে পড়েছে বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চল। প্রথম ঢেউয়ে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দ্বিতীয় ঢেউ ভেঙেছে একের পর এক রেকর্ড। প্রথম ঢেউয়ে এ অঞ্চলে যে সংখ্যক রোগী শনাক্ত এবং মৃত্যু হয়েছে দ্বিতীয় ঢেউয়ে হয়েছে তার কয়েকগুন বেশি।

আবার করোনার শুরু থেকে গত প্রায় ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আক্রান্ত এবং শনাক্ত হয়েছে চলতি বছরের জুলাই মাসে। ১৪ মাসে যে সংখ্যক আক্রান্ত এবং মৃত্যু হয়েছে তার অর্ধেকের বেশি হয়েছে ওই মাসে। যার ধারবাহিকতায় চলতি আগস্ট মাসের শুরুতেও বজায় রয়েছে বলে জানিয়েছে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ২০২০ সালের ৯ মার্চ দক্ষিণাঞ্চলে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায়। এর পর থেকেই দক্ষিণাঞ্চলে করোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হতে থাকে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় মোট আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ৩৬৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ভাইরাসটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪৯৪ জনের।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানিয়েছেন, ‘বরিশালে করোনা পরিস্থিতি’র ১৪ মাস পার হয়েছে। এসময়ের মধ্যে জুলাই মাস সবথেকে খারাপ ভীতির মধ্যে পার করেছে বরিশালবাসী। কেননা শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যে সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত এবং মৃত্যুবরণ করেছেন তার অধিকের বেশি হয়েছে জুলাই মাসে।
তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের গত ১ জুলাই সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৩ মাসে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় মোট আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৫৫২ জন। একই সময় মৃতর সংখ্যা ছিল ২৮৬ জন এবং সুস্থ রোগীর সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৭৮৪ জন।

একমাসের ব্যবধানে সুস্থ রোগীর সংখ্যা বেশি একটা বৃদ্ধি না পেলে আক্রান্ত এবং মৃতর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুনের বেশি। শুধুমাত্র জুলাই মাসের ৩১ দিনে বরিশাল বিভাগে মোট আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৭৫ জন। যা গত ১৩ মাসের দ্বিগুনের বেশি।

অপরদিকে, একই মাসে মৃত্যু হয়েছে ২০১ জনের। আর আগের ১৩ মাসে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৮৬ জনের। আগের ১৩ মাসে সুস্থ রোগীর সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৭৮৪ জন। পরবর্তী জুলাই মাসে মোট সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৫ হাজার ৬৫২ জন। যা আক্রান্তের তুলনায় কয়েকগুন কম।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস বলেন, ‘আমরা দেখেছি গত জুলাই মাসের প্রথম দিনে দৈনিক আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৬ জন। ওদিন মৃত্যু হয়নি কারো। তবে জুলাই মাসের শেষ তারিখ অর্থাৎ ৩১ জুলাই সকাল ৮টা থেকে ১ আগস্ট সকাল ৮টা পর্যন্ত নতুন শনাক্ত হয় ৬৮৫ জন। একই সময় করোনায় আক্রান্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়।

তিনি বলেন, ‘জুলাই মাসের মতই করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমূখি আগস্টের শুরুটা। এই মাসে অর্থাৎ ১ আগস্ট সকাল ৮টা থেকে ৩ আগস্ট সকাল ৮টা পর্যন্ত মোট এক হাজার ৫৩৮ জন শনাক্ত এবং ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১ থেকে ২ আগস্ট সকাল পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে সর্বোচ্চ ১৩ জনের। চলতি মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫৭০ জন।
ডা. বাসুদেব কুমার বলেন, করোনা থেকে সুরক্ষার জন্য এখন একটি পথই খোলা রয়েছে। তা হলো ভ্যাকসিন গ্রহণের পাশাপাশি মানুষকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সরকার যে লকডাউন দিয়েছে সেটা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন এবং মানুষ মেনে চললে এতোটা সংক্রমণ নাও হতে পারতো। জীবিকার পাশাপাশি জীবনের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে মাস্ক পড়াকে অভ্যেসে পরিণত করা, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘরে বাইরে না যাওয়া এবং গণজমায়েত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন ওই চিকিৎসক।
 


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন