কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ঝালকাঠিতে কামারপাড়া সরগরম


সারা বছর অনেকটা অলস সময় কাটালেও এখন মহা ব্যস্ততায় ঝালকাঠির কামার পাড়ার বাসিন্দারা। কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত কামারের দোকানে চলে টুং-ট্যাং শব্দ। তৈরি হচ্ছে দা, বটি, ছুরি ও চাপাতি। অনেকে আবার গরু জবাই ও মাংস কাটার জন্য পুরনো অস্ত্র মেরামতের জন্য ভির করছেন কামারদের দোকানে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কামাররা।
কামারপাড়া ঘুরে দেখা যায়, কেউ হাতুড়ি দিয়ে লোহা পেটাচ্ছে, কেউ হপার টানছে। শান (ধার) দিচ্ছে কেউ কেউ, আবার হপারে কয়লা দিতে ব্যস্ত। এভাবেই কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে হচ্ছে ঝালকাঠির কামারদের। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দম ফেলার সময় পাচ্ছেন না তারা। জেলা সদরের কামারপট্টিসহ চার উপজেলার শতাধিক স্থানে কামারদের দোকান রয়েছে। কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটার জন্য অনেক আগে থেকেই দা, বটি, ছুরি ও চাপাতি তৈরির অর্ডার নিয়েছেন কামারেরা। কাজের চাপে এখন আর নতুন করে অর্ডার নিতে পারছেন না। বিক্রির জন্য দোকানের সামনে সাজিয়ে রাখা হয়েছে তৈরি করা লোহার ধারালো অস্ত্র। স্প্রিং এবং সাধারণ লোহা থেকে তৈরি করা এসব অস্ত্র পছন্দমত কিনছেন ক্রেতারা। দাম একটু বেশি হলেও বেচা-বিক্রি ভাল বলে জানালেন বিক্রেতারা। পশু জবাই করার ছুরি প্রতিটি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, চামড়া ছড়ানোর ছোট ছুরি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। এছাড়া লোহা দিলে তৈরির মজুরি নেওয়া হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। পশু জবাই এবং মাংস কাটার জন্য ছুরির প্রয়োজন, তাই বেশি দাম হলেও কিনতে হবে বলে জানান ক্রেতারা। গত বছরের চেয়ে এ বছর লোহার দাম একটু বেশি, তাই লোহার তৈরি অস্ত্রের দামও বেশি। ক্রেতাদের পছন্দমত এগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। পূর্ব পুরুষের পেশা ধরে রেখেছেন তারা। বছরের বেশিরভাগ সময়ই তাদের অলস পড়ে থাকতে হয়। কোরবানির সময় লোহার তৈরি ধারালো অস্ত্রের চাহিদা বেশি থাকে। এসময় তাদের ব্যস্ততাও বেড়ে যায়।
নলছিটির তপন কুমার কর্মকার বলেন, আগের চেয়ে বেচা কিনা বেড়েছে। তবে লোহার দাম একটু বেশি। এতেও ক্রেতাদের চাহিদা কমছে না। তারা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী যন্ত্রপাতি কিনছেন। ক্রেতা হুমায়ুন কবির বলেন, প্রতিবছরই কোরবানির সময় নতুন করে পশু জবাই করা ছুরি কিনতে হয়। অনেক সময় আবার পুরনো যন্ত্রাংশ শান দেই। এবছর একটু দাম বেশি। তারপরও প্রয়োজন বিধায় বেশি দাম হলেও কিনতে হচ্ছে।
ঝালকাঠি বিসিকের উপ ব্যবস্থাপক মো. শফিউল করিম বলেন, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিকতা ছোয়া লাগাতে হবে কামার শিল্পে। কামার শিল্পের সঙ্গে জরিতদের বিসিক থেকে সহজ শর্তে লোন দেওয়া হবে।
এইচকেআর
