‘দেশীয় অ্যাপ জনপ্রিয় করতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে’
অ্যাম্বার আইটি দেশের অন্যতম ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী আমিনুল হাকিম কথা বলেছেন কলিং অ্যাপ নিয়ে। জানিয়েছেন কলিং অ্যাপের সম্ভাবনা ও সম্ভাবনা বাস্তবায়নের পথের প্রতিবন্ধকতাগুলো। পাঠকদের জন্য তার বক্তব্য তুলে ধরা হলোঃ
প্রশ্ন: দেশি কলিং অ্যাপের সম্ভাবনা কেমন দেখছেন
আমিনুল হাকিম: ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং, অডিও-ভিডিও কলিং সেবার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, ইমোর মতো অ্যাপস বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশেও জনপ্রিয়। তবে দেশি কলিং অ্যাপে হোয়াটসঅ্যাপ ভাইবারের চেয়েও বাড়তি সুবিধা রয়েছে। দেশি অ্যাপ থেকে অফলাইনে যে কোনো মোবাইল নম্বর কিংবা টেলিফোন নম্বরে অনায়াসে ফোন করা যায়। পাশাপাশি চাইলে আরও বেশ কিছু ফিচার যোগ করা সম্ভব, যা হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইবারের নেই। এ অবস্থায় দেশীয় কলিং অ্যাপের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রশ্ন: সম্ভাবনার জায়গাটা বললেন। এ ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ আছে কি?
আমিনুল হাকিম: চ্যালেঞ্জ তো আছেই। আইপি কলিং অ্যাপে কথা বলার জন্য ভালো মানের নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ লাগবে। স্মার্টফোনও জরুরি; কেননা এমন নয় যে, ফিচার ফোনে এ অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে। কিন্তু দেশে এখনও ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ ফিচার ফোন ব্যবহার করেন। আবার যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা স্ট্যান্ডার্ড মানের ইন্টারনেট সংযোগ পান না। এ সমস্যাগুলো বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রশ্ন: অনেক সময় কল ড্রপ হচ্ছে, টাকা লোড করা যাচ্ছে না- এখন পর্যন্ত চালু হওয়া অ্যাপস ব্যবহারে এমন নানা অভিযোগ আছে গ্রাহকদের।
আমিনুল হাকিম: আমি বলব অ্যাপগুলো একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে আছে, অনেকটা পরীক্ষামূলক বলা যায়। আমরা ট্রায়াল অ্যান্ড এররের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। যে সমস্যা সামনে আসছে সেটি সমাধান করা হচ্ছে। তবে গতিময় ইন্টারনেট নিশ্চিত না হলে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া যাবে না।
প্রশ্ন: টেলিকম অপারেটদের কলিং অ্যাপ নিয়ে আপত্তি রয়েছে
আমিনুল হাকিম: দেখুন হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার নিয়ে আপত্তি নেই। আপত্তি দেশীয় অ্যাপ নিয়ে। কলিং অ্যাপ ব্যবহার করতে হলে টেলিকম অপারেটরদের থেকে কিন্তু গ্রাহকদের ইন্টারনেট কিনতে হচ্ছে। আবার ফোন নম্বরে অফলাইনে কল করা হলেও প্রতি মিনিটে তারা ১৪ পয়সা পাচ্ছে। কিন্তু এরপরও তারা আরও বাড়তি অর্থ চায়। এটা অন্যায্য। তাদের বাড়তি অর্থ দিলে তো কম খরচে কথা বলার সুযোগ দেওয়া যাবে না। আর অ্যাপ থেকে কম খরচে যদি গ্রাহকরা ফোনে কল দিতে না পারেন, তবে কেন এটা ব্যবহার করবেন। একবার তো তারা ইন্টারনেট কিনে খরচ করছেনই, আবার যদি কল করার জন্য প্রতি মিনিটে ৬০-৭০ পয়সা ব্যয় করতে হয়, তবে খরচ তো ডাবল হয়ে গেল। আমরা এই জায়গাটায় আপত্তি জানাচ্ছি। দেশীয় অ্যাপকে জনপ্রিয় করতে এ ক্ষেত্রে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। পলিসি সহায়তা দিতে হবে যেন কম খরচে গ্রাহকরা কথা বলতে পারেন। এটা নিশ্চিত করতে না পারলে কলিং অ্যাপ সেবা দাঁড়াবে না।
এসএমএইচ