বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে দখলবাজদের দৌরাত্ম্য


বরিশালে মহাসড়কে অবৈধ দখলদারদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে। মহাসড়কের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা। ফুটপাতে দোকানের জিনিসপত্র রেখে চলাচলের পথ প্রায় বন্ধ। এ কারণে যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও পথচারীদের।
এদিকে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা সড়ক দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায় বরিশাল -পটুয়াখালী মহাসড়কের পাশের প্রায় কয়েক কিলোমিটার সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা। রীতিমতো দখলের মহোৎসব চলছে মহাসড়কের দু’পাশজুড়ে। নির্মাণ করা হয়েছে স্থায়ী ও অস্থায়ী উভয় ধরনের কাঠামো। তবে অস্থায়ী স্থাপনাই বেশি। সড়ক ও জনপথ বিভাগের এসব জায়গায় বসছে হাটবাজার, গড়ে তোলা হয়েছে দোকানপাটসহ যানবাহনের স্ট্যান্ড। আর এসব দোকানপাট তৈরি করে ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। চলাচলের জন্য রাস্তার পাশে জায়গা না থাকায় পথচারীদের বাধ্য হয়েই ব্যবহার করতে হচ্ছে মূল সড়ক। এতে মহাসড়কে যানজটসহ ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনাও।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক রুপাতলী এলাকার অবৈধ স্থাপনা মাঝে মধ্যে উচ্ছেদ করা হলেও আবার তা গড়ে ওঠে। উভয় পাশে টং দোকান, চা স্টল, খাবার হোটেল, কাপড়ের দোকান, কাঁচাবাজারসহ অন্যান্য পণ্য সামগ্রীর দোকানসহ প্রায় ৩৫-৪০টি অবৈধ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা দোকান থেকে প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা পর্যন্ত টাকা উত্তোলন করা হয়। অর্থাৎ প্রতিদিন ৩০০০-৪০০০ টাকা কালেকশন হয় বলে জানিয়েছে সূত্রটি। এই টাকা স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতাদের পকেটে যায়।
রুপাতলীতে দায়িত্বে থাকা পুলিশের কর্তব্যরত এক সদস্য জানান, সবজি বোঝাই ট্রাক নিয়ে এ সড়ক থেকে চলাচল করার সময় দু’এক মিনিটের জন্য রাস্তা বন্ধ হলেই বাস ট্রাক, প্রাইভেটকারসহ শত শত গাড়ি রং সাইডে (উল্টোপথ) দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে করে দু’দিক থেকেই রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। যা যানজট পরিস্থিতিকে বেসামাল করে তোলে।
তিনি আরো বলেন, অবৈধ স্থাপনার কারণে দুর্ঘটনাকবলিত বা আটকেপড়া গাড়ি সরানোর জন্য ঘটনাস্থলে রেকার দ্রুত পৌঁছানো সম্ভব হয় না। রাস্তার উপর রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, বাস, মিনিবাস, পার্কিং করা থাকে। এতে দ্রুতগামী গাড়িগুলো আটকা পড়ে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, বছরে মাত্র দুই বার ঈদের আগে ঘরমুখো যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কগুলোর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়। ঈদ শেষে আবার আগের অবস্থা ফিরে আসে। বাংলাদেশ সড়ক ও মহাসড়ক আইন অনুযায়ী, কোনো সড়ক বা মহাসড়কের ৩০ ফুটের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। সরকারি বিধানেও তা উল্লেখ রয়েছে। তবে এটা শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ।
তবে বরিশাল -পটুয়াখালী মহাসড়কটির দু’পাশে দিন দিন দখলের মাত্রা বাড়লেও সড়ক ও জনপথ অধিদফতর থেকে নেয়া হয় না কোন জোরালো পদক্ষেপ। দ্রুত এসব দখলমুক্ত করে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে জানতে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদ মাহামুদ সুমন’র মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভি না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এমবি
